ছবি: সংগৃহীত
শিগগির কৃত্রিম চিনিকে ক্যানসারের জন্য দায়ী সম্ভাব্য রাসায়নিক পদার্থ (কার্সিনোজেন) হিসেবে ঘোষণা করবে ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (আইএআরসি)। আগামী ১৪ জুলাই এই কৃত্রিম চিনিকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী যৌগ বলে ঘোষণা দিতে পারে আইএআরসি।
কোকাকোলা, ডায়েট সোডা, চুইংগাম এবং আরও কিছু কোমল পানীয়তে ব্যবহৃত হয় এই অ্যাসপার্টাম (কৃত্রিম নন-স্যাকারাইড সুইটেনার) বা কৃত্রিম চিনি।
জানা গেছে, স্বাস্থ্যের কথা ভেবে আমরা যে ডায়েট কোক খাচ্ছি, তাতেও পাওয়া গেছে ক্যানসারের উপাদান। এ কোকে আর্টিফিশিয়াল সুইটনার হিসেবে ব্যবহার করা অ্যাসপার্টাম নামের মিষ্টিকে ক্যানসার সৃষ্টির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশেষজ্ঞদের বৈঠকের পর জুন মাসের শুরুর দিকে আইএআরসি কৃত্রিম চিনিকে ক্যানসারের জন্য দায়ী সম্ভাব্য রাসায়নিক পদার্থ (কার্সিনোজেন) হিসেবে ঘোষণা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া খাদ্যপণ্যে ব্যবহৃত ক্ষতিকর বিভিন্ন পদার্থ নিয়ে সংস্থাটি আগেও বেশকিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সেসব সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে ভোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারীদের রেসিপি সংশোধন করতে মামলা ও চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
খাদ্য ও পানীয় শিল্পের পণ্যগুলোতে সাধারণত অ্যাসপার্টাম, স্টিভিয়া ও স্যাকারিনের মতো উপাদান যোগ করা হয়। কৃত্রিম নন-স্যাকারাইড সুইটেনার অ্যাসপার্টাম সুক্রোজের চেয়ে ২০০ গুণ বেশি মিষ্টি। সাধারণত খাবার ও পানীয়তে চিনির বিকল্প হিসেবে এগুলো ব্যবহার করা হয়।
চিনির বিকল্প হিসেবে মানুষের কৃত্রিম সুইটেনার গ্রহণ খুব বেশি সুবিধা দেয় না বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ দল বিস্তারিত পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জুন মাসে বৈঠকে বসে। সেখানে জানানো হয়, অ্যাসপার্টেমে কারসিনোজেন নামের ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান পেয়েছেন তারা।
এদিকে, ডায়েট কোকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানের ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় না থেকে আগেই এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যে কোনো বিষয়ে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্তে আসা উচিত বলেও মনে করে জনস্বার্থ রক্ষাকারী এ প্রতিষ্ঠান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় ডায়েট কোকে ক্যানসারের উপাদান শনাক্ত হওয়ার পরও বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে কোকা কোলা জিরো। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি জনগণকে আরও সচেতন হতে বলছেন পুষ্টিবিদরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ১৯৮১ সালে অ্যাসপারটেম ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। এরপর থেকে পাঁচবার এর নিরাপত্তা পর্ব চলে। বর্তমানে প্রায় ৯০টি দেশে এই কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা হচ্ছে। এক চামচ সাধারণ চিনির তুলনায় ২০ গুণ বেশি মিষ্টি এই কৃত্রিম চিনি।
শুধু কোকাকোলা-চুইংগামেই নয়, বাজারে যে সব ইনস্ট্যান্ট টি বা তৈরি করা চা/কফি পাওয়া যায় তার মধ্যে ৯০ শতাংশতেই এই যৌগ রয়েছে।
আপন দেশ/আরএ