ফাইল ছবি
কোনো কিছুর অনুপ্রেরণা কবিতা। বাকি সব সৃষ্টি তার মতো চলুক। এটি যেকোনো কবির ভাবনা! তিনি কবি হতে পারেন বলেই এমন দৃষ্টতা। বাদ দিই প্রসঙ্গ। কবি না হলেও কবিতা ভালোবাসে; সাহিত্য ভালোবাসে; শিল্প আলোড়ন তুলে এমন মানুষ তো প্রায় সবাই। বাহুল্য এত কথা বলছি ২০২০ সালে সাহিত্যে নোবেলজয়ী আমেরিকার কবি লুইস গ্লুকের কথা বলব বলে।
লুইস গ্লুক একজন কবি। অধ্যাপনা করেছেন। ভাব বিলিয়ে গিয়েছেন পরিবেশে। তার ১২টি কবিতার বই আছে। তিনি প্রবন্ধও লিখেছেন। তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য ওয়াইল্ড আইরিস’ ও ‘ফেইথফুল অ্যান্ড ভার্চুয়াস নাইট’। অন্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো- ফার্স্টবর্ন (১৯৬৮), দ্য হাউস অন মার্শল্যান্ড (১৯৭৫), দ্য গার্ডেন (১৯৭৬), ডিসেনডিং ফিগার (১৯৮০), দ্য ট্রায়াম্ফ অব অ্যাকিলিস (১৯৮৫), অ্যারার্যাট (১৯৯০), দ্য ফার্স্ট ফোর বুকস অব পোয়েমস (১৯৯৫), মিডোল্যান্ডস (১৯৯৬), ভিটা নোভা (১৯৯৯), দ্য সেভেন এইজেস (২০০১), অক্টোবর (২০০৪), অ্যাভার্নো (২০০৬), অ্যা ভিলেজ লাইফ (২০০৯) এবং পোয়েমস ১৯৬২-২০১২ (২০১২)।
সাহিত্যগুণের জন্য সব সময়ই সমাদৃত লুইস। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত কবিতার বই ‘দ্য ওয়াইল্ড আইরিস’ তাকে এনে দেয় পুলিৎজার পুরস্কার। ৮০ বছর বয়সি এ সাহিত্যিক যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হিউম্যানিটিজ মেডেল, ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড, ন্যাশনাল বুক ক্রিটিক সার্কেল অ্যাওয়ার্ড ও বলিঞ্জেন পুরস্কারসহ অনেক সাহিত্য পুরস্কার জিতেছেন। তার লেখায় দেখা মেলে পারিবারিক জীবন, বাল্যকাল আর গ্রিক-রোমান পৌরাণিক কাহিনির সাবলীল ও নান্দনিক প্রকাশ। লুইস গ্লুক ১৯৪৩ সালের ২২ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে এক হাঙ্গেরিয়ান বংশোদ্ভূত ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যে কারণে তার বংশনাম ইদ্দিশ ভাষার অন্তর্গত।
লুইসের সৃষ্টি পড়তে হবে। হয়তো তিনি ক্রমশ সৃষ্টি ভাণ্ডার বাড়াতেনই। শেষ বয়সে প্রতিষ্ঠার শেষপর্যায়ে তিনি নোবেলজয়ীর স্বীকৃতি পান। একজন প্রকৃত শিল্পী পুরস্কারের তরে নন। ফলে স্বভাবতই অনুমেয় গ্লুক তার প্রেরণার একটি পালক পেয়েছেন। তিনি এমন পালকে ছেয়ে আছেন।
সমাজ কাউকে তুলে ধরলেই আমরা তাকে চিনি এ অক্ষমতা নিয়েই বলি- গ্লুকের সৃষ্টিকর্ম এখন অনেক অনুবাদ হচ্ছে; এভাবেই তার সৃষ্টিকর্ম আমাদের হাতের কাছে।
গ্লুক একজন কবি, তো সহজেই নিজেকে ঘুরেফিরে সাহিত্যে বলবেন। গ্লুককে মাঝে মাঝে আত্মজীবনীমূলক কবি হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এ কথা মনে ধরেছে। পৃথিবীর তাবৎ সাহিত্যিক-কবি চেতনে-অবচেতনে সাহিত্যে তাকেই বলে গেছেন। নানাভাবে এটি হয়েছে।
পয়েটস অ্যান্ড রাইটারস ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্লুক তার জীবন ও কাজের মাঝে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে বলেন, ‘আপনি যদি আপনার প্রকৃত কাজ খুঁজে পান তবে আপনি বাস করতে পারবেন।’ গত ১৩ অক্টোবর ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত হন কবি লুইস গ্লুক।
জয়তু গ্লুক। একজন নাগরিক কবি। একজন আধুনিক কবি। একুশ শতকের অগ্রণী কবি। আপনি পাঠ হবেন নিরন্তর। এ একজন স্রষ্টার প্রকৃত সুখ।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।