ফাইল ছবি
অদ্বৈত মল্লবর্মণের সমগ্র সাহিত্যিক জীবনে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসটি অমর কীর্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রতিকূল সংঘাতে জর্জরিত মৎস্যজীবী বা মালো সম্প্রদায়ের যে মানুষদের কাহিনী এই উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে তিনি সেই ‘মালো’ সম্প্রদায়েরই লোক ছিলেন।
বাংলা উপন্যাসের একজন অকৃত্রিম শিল্পী অদ্বৈত মল্লবর্মণ। নিজ জীবনের বাস্তব কঠিন অভিজ্ঞতাই তার রচনার অন্যতম স্বাতন্ত্র হিসেবে ধরা দেয় পাঠকমনে। গোকর্ণঘাটের তিতাস তীরবর্তী লোকালয় যেখানে তিনি জন্মেছিলেন সেই মালোপাড়াই তার তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসের পটভূমি। উপন্যাসটিতে ঘিরে রয়েছে ঔপন্যাসিকের আপন জগতের এক গভীর অভিব্যক্তি। মালোজীবনের গভীরতম দুঃখ বেদনার সুর এ উপন্যাসকে বাংলা সাহিত্যে অনন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে তুলেছে নিঃসন্দেহে। মালো সমাজের পরিবেশগত ঘনিষ্ঠতা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনের বহুমাত্রিক রূপায়ণ এ উপন্যাসে করেছেন লেখক অত্যন্ত নিখুঁতভাবে। মানব জীবন ও জীবিকার সীমাহীন সংগ্রাম, আর চরিত্রের বেড়াজালে মানবতার পরাজয় ব্যপ্ত হয়ে উঠেছে উপন্যাসে। লেখক আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন মানুষের জীবনের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও অমোঘ প্রকৃতি ও প্রবহমান কালের সত্য ট্র্যাজিক পরিণতি ডেকে আনে। ট্র্যাজেডি শুধু ব্যক্তিমানুষের একার নয়; সমগ্র সমাজব্যাপী। ব্যক্তিজীবনের বোধ ও অনুভূতি এ-উপন্যাসে থাকলেও তা ব্যক্তিসর্বস্ব হয়ে ওঠে না, হয়ে উঠেছে সর্বজনীন। নিম্নজীবী মানুষের ব্যথা বেদনাকে আপন অভিজ্ঞতার আলোকে নির্মিত বাস্তবতার নাম ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
উপন্যাসটি প্রথমে মাসিক পত্রিকা মোহাম্মদীতে প্রকাশিত হয়েছিল। কয়েকটি অধ্যায় মোহাম্মদীতে মুদ্রিত হওয়ার পর উপন্যাসটির মূল পাণ্ডুলিপি হারিয়ে যায়। পরে বন্ধু-বান্ধব ও অত্যাগ্রহী পাঠকদের অনুরোধে তিনি পুনরায় কাহিনীটি লেখেন। কাঁচড়াপাড়া হাসপাতালে ভর্তির আগে এই গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি বন্ধু-বান্ধবকে দিয়ে যান। তার মৃত্যুর কয়েক বছর পর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটিকে কেন্দ্র করে খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটক ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে তিতাস একটি নদীর নাম শিরোনামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন যা; ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। অদ্বৈত মল্লবর্মণ তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর তীরে ১ জানুয়ারি, ১৮৯১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা অধরচন্দ্র মল্লবর্মণ। তিন ভাই এক বোন। অল্প বয়সেই তার সকল ভাইয়েরা মৃত্যুবরণ করে।
বোন বিধবা হন অল্প বয়সে। বাবা-মা মারা যান অল্প বয়সেই। সারাজীবন ধরে দুঃখ আর সংগ্রামের সঙ্গে কাটে তার জীবন। পরের সাহায্য সহযোগিতায় হাইস্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হলেও লেখাপড়া অসম্পূর্ণ রেখেই তিনি কলকাতা চলে যান জীবিকার তাগিদে। ‘ত্রিপুরা’, ‘নবশক্তি’, ‘মোহাম্মদী’, ‘আজাদ’ প্রভৃতি নানা পত্র-পত্রিকায় কাজ করে অবশেষে সাগরময় ঘোষের সহায়তায় ১৯৪৫ সালে ‘দেশ’ পত্রিকায় যোগ দেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ। কলকাতার জীবনেও তেমন শান্তির ছিল না। কলকাতার মেসবাড়িতে থাকার সময় আত্মীয়কৃত্য আর বই কেনার কাজে তার জীবনের সমুদয় অর্থ তিনি ব্যয় করেছেন। ১৯৫০ সালের দিকে ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হন। প্রথমবার চিকিৎসা নিলেও সাগরময় ঘোষের চেষ্টায় দ্বিতীয়বারের মতো কাঁচড়াপাড়া যক্ষা হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখান থেকে তিনি পালিয়ে আসেন। অবশেষে ১৯৫১ সালের ১৬ এপ্রিল কলকাতার ষষ্ঠীতলার বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিতাস নদীর বর্ণনা লেখকের তুলিতে নীরব মধুরতা দিয়ে শুরু হয় কিন্তু কালের ভয়াবহতা গ্রাস করে এখানকার মানুষকে এবং করে সর্বহারা। গোকর্ণঘাট গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জলে দুকূল উপচে পড়া এক নদী তিতাস। ছোট এই নদী অদ্বৈত মল্লবর্মণের কারণে আজ বেশ পরিচিত। লেখকের ভাষায়, ‘তিতাসের বুকে তেমন কোন ইতিহাস নাই। সে শুধু একটা নদী।’ এ নদীর পাড়ে বসবাসরত অবহেলিত ও আধুনিক জীবনের সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ মানুষের জীবনযাপন। তিতাসকে কেন্দ্র করেই তাদের হাসি কান্না ও ভালোবাসা জেগে ওঠে আবার এক সময় তা মিলিয়ে যায়। ‘তিতাস কত শান্ত। তিতাসের বুকে ঝড়-তুফানের রাতেও স্বামী-পুত্রদের পাঠাইয়া ভয় করে না। বউরা মনে করে স্বামীরা তাদের বাহুর বাঁধনেই আছে, মায়েরা ভাবে ছেলেরা ঠিক মায়ের বুকেই মাথা এলাইয়া দিয়া শান্ত মনে জাল গুটাইতেছে।’ চারটি পর্ব ও আটটি উপপর্ব রয়েছে এই উপন্যাসে । প্রথম অংশের নাম ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। উপন্যাসের নামেই এ অধ্যায়ের শিরোনাম। এ অংশে তিতাসের বর্ণনার মোহনীয় ভাষাভঙ্গি গভীর দার্শনিক এক উপলব্ধি সৃষ্টি করে পাঠক মনে। তিতাসকে কেন্দ্র করে মানুষের বাঁচা মরার প্রসঙ্গ এবং তাদের জীবন-জীবিকার সীমাহীন জটিলতা ওঠে আসে এখানে। নদীর নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহের মতোই এখানে গোষ্ঠীজীবনের কঠিন বাস্তবতা দেখা যায় । মানুষের জন্ম এখানে অবহেলায়, বেড়ে ওঠা যাতনায়। জন্মে কোনো পাপ না থাকলেও জেলেপাড়ার শিশুরা বৈষম্যমূলক পৃথিবীর দেনার জালে আবদ্ধ।
লেখক অবহেলিত তিতাসপাড়ের মানুষের জন্মের ইতিবৃত্ত তুলে ধরেন এভাবে- ‘সে দেখিয়াছে কত শিশুর জন্ম, দেখিয়াছে আর ভাবিয়াছে। ভাবী নিগ্রহের নিগড়ে নিবদ্ধ এই অজ্ঞ শিশুগুলি জানে না, হাসির নামে কত বিষাদ, সুখের নামে কত ব্যথা, মধুর নামে কত বিষ তাদের জন্য অপেক্ষা করিয়া আছে।’ তিতাসের তীরে জেলে ছাড়াও আছে কৃষিজীবীদের বাস। লেখক তাদেরও জীবন-জীবিকার জটিলতাকে ধারণ করেছেন নিপুণভাবে। উপন্যাসের প্রথম পর্বেই গৃহস্ত জোবেদ আলীর বাড়িতে কাজ করতে আসা দু জন মুনীর পারিবারিক কষ্টের বিবরণের মধ্যে সে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। তাইতো খাওয়ার পর গামছায় মুখ মুছতে মুছতে বন্দেআলী তার পরিবারে অভুক্ত থাকা স্ত্রীর কথা ভাবে। ‘ভাই করমালী নিজে ত খাইলাম ঝাগুর মাছের ঝোল। আমার ঘরের মানুষের একমুঠ শাক ভাত আজ জুটল নি, কি জানি?’ নিম্নশ্রেণীর মানুষের আরেকটি সংকট দেখা দেয়। তা হল বন্দেআলীর দৃষ্টিতে করমালীর প্রেমিক মন নিষ্ঠাহীন। কারণ ভূমিহীন চাষীর কাছে এসবের কোনো দাম নেই। জীবনে ভালো থাকা যাকে বলে তারা তার অংশীদার নয়। এজন্যই লেখক বলেন- ‘জীবনে যদি বসন্ত আসে তবেই এসবের দাম চোখে ধরা পড়ে।
তাদের জীবনে বসন্ত আসে কই।’ নারীর অন্তর্জীবনের যন্ত্রণাও তিতাসের পাড়ে যেন আঁছড়ে পড়ে। কাপড়ে ঢাকা নৌকায় চড়ে ‘যে বউ স্বামীর বাড়ি যায়, তার এক চোখে প্রজাপতি নাচে, আরেক চোখে থাকে জল’। শত বেদনার ইতিহাসে খচিত তিতাসের বুক। তিতাস নদী নিজেই রচনা করে চলে এক ইতিহাস। আর সে ইতিহাস বাংলাদেশের নদীবিধৌত শত শত জনপদের নিম্নজীবী মানুষের বাঁচা মরার ইতিহাস। উপন্যাসের দ্বিতীয়পর্ব ‘প্রবাসখণ্ড’ মালোদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার দৃশ্যপট উন্মোচন করে সাবলীলভাবে। নদীভিত্তিক সমাজের পরিবেশগত বাস্তব পরিচয়ে দিয়ে পরিচিত এই মালোপাড়া। সঙ্গে সঙ্গে মালোজীবনের গভীর সত্য ও বৃহত্তর সংগ্রামী জীবনের ইঙ্গিত এ-পর্বকে বিশিষ্ট করে তোলে। ‘ধনুকের মত বাঁকা’ তিতাসের তীর ঘেঁষে দক্ষিণপাড়ায় ছোটো ছোটো ঘর বেঁধে বাস করে মালোসম্প্রদায়। লেখকের বর্ণনায়Ñ ‘ঘাটে বাঁধা নৌকা, মাটিতে ছড়ানো জাল, উঠানের কোণে গাবের মটকি, ঘরে ঘরে চরকি, টেকো, তক্লি- সুতা কাটার, জাল বোনার সরঞ্জাম। এই সব নিয়াই মালোদের সংসার।’ কিশোর, বাসন্তী ও সুবলকে ঘিরে কষ্টের যে জীবন তা এখানে আভাসে চিত্রিত হয়েছে।
আরও পড়ুন <> কেন সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি
বাসন্তীর জন্য সুবল ও কিশোর দু জন মিলে ‘চৌয়ারি’ বানালেও সুবলকে তার অধিকার ছেড়ে দেওয়া কিশোরের পরিণামী বাস্তবতার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। পরবর্তী কালে বাসন্তীর মনে কিশোরের জন্য সে অনুভবি সত্তার আবিষ্কার পাগল কিশোরের প্রতি ভাবনায় ও অনন্তের মার প্রতি বাসন্তীর তীব্র মমত্ববোধে ভিন্নতর এক বাস্তবতা সৃষ্টি করেছে। তবু এ উপন্যাসে প্রেম কোনো মুখ্য ব্যাপার নয়। জীবন-সংগ্রামে নিয়ত যোদ্ধা মালোদের গভীরতম এক সত্যের কথাই এ উপন্যাস বিধৃত।
সুবল কিশোরদের লেখাপড়ার পাট শেষ হয়ে যায় বাল্য বয়সেই। অন্যের নৌকায় জীবিকারোহনের জন্য প্রবাসযাত্রা তাদের এ পর্বেই। মালোজীবনের নিয়ত সংগ্রামের শুরুও এখান থেকে। নৌকা চালনার পথে ভৈরবে গিয়ে সন্ধ্যা হলো রাত্রির আশ্রয়প্রার্থী তাদের চোখে ধরা পড়ে মালোজীবনের আরেক বাস্তব চিত্র। তারা আবিষ্কার করে যান্ত্রিক পৃথিবী ও নাগরিক জীবনের সুবিধাপ্রাপ্ত ভৈরবের মালোরা তাদের চেয়ে অগ্রগামী। তিতাস পাড়ের মালোদের না পাওয়ার কথা উপন্যাসে ফুটে উঠেছে এভাবেÑ ‘এ গায়ের মালোরা গরীব নয়। বড় নদীতে মাছ ধরে। রেলবাবুদের পাশে থাকে। গাড়িতে করিয়া মাছ চালান দেয়। তারা আছে মন্দ না।’
ভৈরবের মালোসমাজে এ অবস্থার পেছনেও যে একটি অশুভ শক্তির অশুভ তৎপরতা আছে তা বুঝতে বাকি থাকে না। নাগরিক সভ্যতা কর্তৃক গ্রাম বিনাশের যন্ত্রণা এবং গ্রামীণ সংস্কৃতি নষ্ট হওয়ার কষ্ট সুবল, কিশোর আর তাদের নৌকার সঙ্গী বৃদ্ধ তিলকও বুঝতে পারে। সুবল তাই বলে উঠে- ‘কিশোর দাদা ভৈরবের মালোরা কি কাণ্ড করে জান নি? তারা জামা জুতা ভাড়া কইরা রেল কোম্পানির বাবুরার বাসার কাছ দিয়া বেড়ায়, আর বাবুরাও মালোপাড়ায় বইয়া তামুক টানে আর কয়, পোলাপান ইস্কুলে দেও- শিক্ষিৎ হও শিক্ষিৎ হও।’ উজানিনগরের খলায় বাঁশিরাম মোড়লের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে সুবল ও কিশোর দেখে এখানে রান্না হয়েছে বড় মাছের ঝোল। মোড়ল ও মোড়ল গিন্নীর যত্ন সত্ত্বেও কিশোর ও কিশোরের মনের গোপন অথচ নির্মম সত্যের এক চিত্র দান করে লেখক। বড় মাছ তাদের জালে ধরা পড়লেও পয়সার জন্য বেঁচে দিতে হয়। অদ্বৈত মল্লবর্মণের ব্যক্তিজীবন থেকে জানা যায় তিনি সারাজীবন তার মুষ্টিঅন্ন অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন। মালোপাড়ার কেউ তার কলকাতার বাড়িতে পৌঁছালে তিনি তাদেরকে যথাসাধ্য সম্মান ও অর্থ সাহায্য করেছেন। তবু অনন্তের মধ্যে যে বেদনাবোধের সঞ্চার তিনি করেছেন তা তার নিজস্ব জনগোষ্ঠীর প্রতি ঐকান্তিক অনুভব ও যাতনা। ধ্বংসপ্রাপ্ত মালোসমাজের অস্তিত্বের সঙ্গে লেখকের নিজস্ব আত্মা যেন জড়িয়ে পড়েছে। তিতাসের স্রষ্টা হিসেবেই অদ্বৈত একজন বড়ো লেখক হয়ে ওঠেন। রাইন, টেমস, সীন বা দানিয়ুবের মতো ক্ষুদ্র নদীর তীরে যেমন গড়ে উঠেছিল নদীকেন্দ্রিক ইউরোপীয় সভ্যতা, তেমনি তিতাসের তীরেও গড়ে উঠেছিল এক সৃষ্টিশীল জীবন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
উপন্যাসের প্রধান দুই চরিত্র বাসন্তী ও তিতাস নদী। বাসন্তী বৈরী শক্তির বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী চরিত্র। আর ‘তিতাস নদী’ জেলে জীবনের এক বাস্তব উৎসের প্রতীক। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসে জেলে পল্লির খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলা হয়েছে। লেখকের সাবলীল বর্ণনায় এ উপন্যাসের চরিত্রগুলো বাস্তব হয়ে উঠেছে।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।