ছবি: সংগৃহীত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা কাবুলিওয়ালা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় ছোটগল্প। যা মানুষের মধ্যে গভীর মানবিক সম্পর্কের চিত্র তুলে ধরেছে। গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৯২ সালে। তখন থেকেই এটি পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে।
কাবুলিওয়ালা গল্পটি মূলত আফগানিস্তানের এক ফল বিক্রেতা রহমত ও কলকাতার এক ছোট মেয়ে মিনির মধ্যকার হৃদয়স্পর্শী বন্ধুত্বের কাহিনি।
রহমত যিনি পেশায় একজন কাবুলিওয়ালা। প্রতি বছর শুকনো ফল বিক্রি করতে কলকাতায় যেতেন তিনি। কলকাতায় এসে ফল বিক্রি করলেও তার মন পড়ে থাকত আফগানিস্তানে থাকা তার মেয়ের কাছে।
অপরদিকে মধ্যবিত্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারের পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে মিনি। যে রহমতকে নিজের বাবার মতোই ভালোবাসতে শুরু করে। যেটি রহমতকে আফগানিস্তানে তার নিজের মেয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। গল্পটি ধীরে ধীরে রূপ নেয় এক মানসিক ও আবেগের সেতুতে। যেখানে রহমত ও মিনির সম্পর্ক শুধুমাত্র কাজেরসুত্রে নয়, বরং তা একটি আন্তরিক ও আবেগপ্রবণ মানবিক বন্ধন।
কাহিনীর চমক আসে যখন রহমত তার মেয়েকে ভেবে মিনির সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু এক পর্যায়ে একটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে রহমতকে ১০ বছরের জন্য কারাগারে যেতে হয়। এরপর বছরের পর বছর কেটে যায়। রহমত কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সে তার প্রিয় বন্ধু মিনিকে দেখতে যায়। কিন্তু তখন মিনি অনেক বড় হয়ে গেছে, বয়স হয়েছে চোদ্দো বছর। শীঘ্রই তার বিয়ে। মিনি রহমতকে চিনতে পারে না। তার ছোটবেলার সে মধুর স্মৃতিগুলো অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।
কাবুলিওয়ালা গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসাধারণ সৃষ্টিশীলতার পরিচয় বহন করে। এর মাধ্যমে তিনি মানবতা, ভালবাসা এবং সম্পর্কের গভীরতা ফুটিয়ে তুলেছেন। গল্পটি আজও পাঠক হৃদয়ে একইভাবে আবেদন সৃষ্টি করে, যেমনটি করেছিল প্রকাশের প্রথম দিনেই।
এ গল্প নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে বহুবার সিনেমা নির্মিত হয়েছে।
আপন দেশ/অর্পিতা
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।