ফাইল ছবি
বাঙালির সৃজন ও মননের প্রতিষ্ঠান বাংলা অ্যাকাডেমির ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ (০৩ ডিসেম্বর)। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা, গবেষণা ও প্রচারের লক্ষ্যে ১৯৫৫ সালের আজকের এ দিনে যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলা অ্যাকাডেমির। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতির প্রতি এবং বাংলা অ্যাকাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহহর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বিকেল ৩টায় অ্যাকাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে স্বাগত বক্তব্য দিবেন অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। বাংলা অ্যাকাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মনসুর মুসা। প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
বাংলা অ্যাকাডেমির মতো প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও সংগঠনের বিষয়ে প্রথম চিন্তা করেন বহু ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে ভাষাসংক্রান্ত একটি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। এ ছাড়া দৈনিক আজাদ পত্রিকা বাংলা অ্যাকাডেমির গঠনে জনমত সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ১৯৫২ সালের ২৯ এপ্রিল পত্রিকাটি বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে এ প্রসঙ্গে সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সে সময় কিছু প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছিল।
১৯৫৪ সালের পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। কিন্তু অর্থাভাবে প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হয়নি। ওই বছর যুক্তফ্রন্টের সরকার গঠিত হলে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী সৈয়দ আজিজুল হক নির্দেশ দেন। অবশেষে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার উদ্বোধন করেন বাংলা অ্যাকাডেমি। এর প্রথম সচিব হন মুহম্মদ বরকতুল্লাহ। তার পদবি ছিল বিশেষ কর্মকর্তা।
১৯৫৬ সালে অ্যাকাডেমির প্রথম পরিচালক নিযুক্ত হন অধ্যাপক ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক। প্রথম প্রকাশিত বই আহমেদ শরীফ সম্পাদিত দৌলত উজির বাহরাম খান রচিত ‘লায়লী-মজনু’। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন বর্ধমান হাউসে অ্যাকাডেমির সদর দফতর স্থাপন করা হয়। পরে নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয় প্রশাসনিক ভবন। ১৯৫৭ সালের এপ্রিলে গৃহীত ‘দ্য বেঙ্গলি একাডেমি অ্যাক্ট ১৯৫৭’ অনুযায়ী বাংলা অ্যাকাডেমিকে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দেয়া হয়।
বাংলা অ্যাকাডেমির লক্ষ্য ও আদর্শে উল্লেখ রয়েছে, দেশজ সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সমকালীন শিল্প ও সাহিত্য সংরক্ষণ এবং গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির মানসিক বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।