উপরে বাঁয়ে মোরশেদ শফিউল হাসান, খলিকুজ্জামান ইলিয়াস ও সাজ্জাদ শরীফ,
বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য ২০২৪-এর পুরস্কার কমিটির জুরিদের নিয়ে বিতর্ক উঠেছে লেখক ও পাঠক মহলে। বিতর্কিত কমিটি নিয়ে ক্ষুব্ধ পাঠক, লেখকসহ সাহিত্যাঙ্গনের সুধীমহল। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদের দোসররা ঠিকই স্থান পেয়েছে বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ এর কমিটিতে। যার কারণে এবারের পুরস্কারে স্থান পাওয়া বেশিরভাগই ছিল ফ্যাসিবাদের দোসর লেখকরা।
বিক্ষুব্ধ লেখক সমাজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে ঘোষিত পুরস্কার তালিকা স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু বাদ পডেনি কমিটিতে থাকা জুরিরা। একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানের প্রভাব এবারের পুরস্কারকে বিতর্কিত করেছে বলে মনে করেন সুধীজন ও লেখক সমাজের অনেকে। ওই প্রতিষ্ঠানের জনৈক ব্যক্তি পুরস্কার কমিটি ও বাংলা অ্যাকাডেমির নির্বাহী পরিষদের সদস্য থাকায় তার অনুগতদের দিয়ে তিনি পুরস্কার কমিটি সাজিয়েছেন। এমন অভিযোগ একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রের ও বেশ কয়েকজন বিদগ্ধ লেখকের।
আারও পড়ুন<<>> বাংলা অ্যাকাডেমি ঘেরাও, সাহিত্য পুরস্কার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ফ্যাসিবাদের দোসর সাজ্জাদ শরীফ, সাহিত্যঙ্গনে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত মোরশেদ শফিউল হাসান, ফ্যাসিবাদের সঙ্গী খলিকুজ্জামান ইলিয়াস, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীর প্রকাশক ইউপিএল'এর মাহরুখ মহিউদ্দিনের স্বামী ও সূত্রাপুর আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ আহমেদকে বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ এর কমিটিতে রাখা হয়েছে। বাংলা অ্যাকাডেমি পরোক্ষভাবে ফ্যাসিস্টদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন বলে জানিয়েছেন লেখক মোস্তফা মজিদ। পুরস্কারের বিতর্কিত এ কমিটিতে বয়সে তরুণ ও সাহিত্যে অনভিজ্ঞ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগমকে রাখাতে পুরস্কার স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক সজ্জন ব্যক্তি হওয়াতে তাকে পাশ কাটিয়েই বিতর্কিত এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর লেখক সমাজ প্রতিবাদে সোচ্চার। এমনকি বিতর্ক তৈরি হয়েছে বাংলা অ্যাকাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যেও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা অ্যাকাডেমির একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা পালিয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদের দালালরা এখনো বাংলা অ্যাকাডেমিতে ঘাপটি মেরে বসে আছে। ফ্যাসিবাদের দোসরর না থাকলে পুরস্কার কমিটি ও পুরস্কার নিয়ে এত বিতর্ক তৈরি হতো না।
পুরস্কার কমিটির বিতর্ক নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, পুরস্কার কমিটিতে অ্যাকাডেমির সভাপতির কোনো ভূমিকা থাকে না। এটি অন্য একটি প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে মহাপরিচালকই সব।
মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের কছে কমিটি নিয়ে তৈরি সমালোচনা ও বিতর্কের বিষয় জানতে চাইলে একাধিকবার কল দেয়ার পরেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।