Apan Desh | আপন দেশ

ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, দাবি পুরনে ৫দিনের আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ২০:৩০, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, দাবি পুরনে ৫দিনের আল্টিমেটাম

ভোরের কাগজ নিয়ে মালিক-কর্তৃপক্ষের অপতৎপরতার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: আপন দেশ

ভোরের কাগজ নিয়ে মালিক-কর্তৃপক্ষের অপতৎপরতার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন পত্রিকাটির সাংবাদিক-কর্মচারীরা। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগের মৌচাকে ভোরের কাগজ অফিসের সামনে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে সাংবাদিক-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। মালিকপক্ষকে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী ভোরের কাগজের সব সাংবাদিক-কর্মচারীদের দাবি পূরণ করতে হবে। 

ভোরের কাগজ যেহেতু ৮ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেছে। এমন ঘোষণা দিয়ে সরকার থেকে ৯০০/-টাকা কলাম ইঞ্চি বিজ্ঞাপনসহ সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। কিন্ত সাংবাদিক কর্মচারিদের ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। কোন নিয়োগপত্র দেয়নি। কর্মসূচি থেকে নিয়োগপত্র, ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ সমস্ত বকেয়া বেতনসহ সার্ভিস বেনিফিট দিতে হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।

পত্রিকাটির মালিকরা কর্মরত সাংবাদিক-কর্মচারীদের ছাঁটাই করে ডিক্লারেশন বাঁচাতে ক্ষুদ্র একটি টিম নিয়ে পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। 

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত  ছিলেন। সমাবেশে ভোরের কাগজের সাংবাদিক-কর্মচারীদের দাবি দাওয়া পূরণে পাঁচ দিনের আল্টিমেটাম দেন সাংবাদিক নেতারা। 

বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, এখানে এসে যেটা শুনলাম, তা আমাকে মর্মাহত করেছে। ভোরের কাগজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে একজন কর্মচারী ৩৩ বছর চাকুরি করে এখন সে বেতন পাচ্ছে ১৫ হাজার টাকা। এটা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনা করা যায়! এর চেয়ে নির্মমতা আর কী হতে পারে। অথচ এ পত্রিকাটি অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী সাংবাদিক-কর্মচারীদের সব সুযোগ-সুবিধা দেয়ার শর্তে সরকারের কাছ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আদায়  করেছে। কিন্তু যাদের কথা বলে এ সুযোগ-সুবিধা আদায় করেছে, তাদের বছরের পর বছর বঞ্চিত করেছে। এখন সময় এসেছে সব বঞ্চণার অবসানের। আর কালক্ষেপন নয়, অনতিবিলম্বে আমার সাংবাদিক সহকর্মীদের সব দেনা-পাওনা পরিশোধ করতে হবে।

আরও পড়ুন<<>> সাংবাদিক আল ইহ্সানের বিরুদ্ধে মামলায় ডিইউজের উদ্বেগ

তিনি মালিকপক্ষকে হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করে বলেন, আগামী পাঁচদিনের মধ্যে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী ভোরের কাগজের সব সাংবাদিক-কর্মচারীদের দাবি পূরণ করতে হবে। অন্যথায় আমরা ভোরের কাগজের সাংবাদিক-কর্মচারীদের পাশে থেকে আরো কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে দাবী আদায় করে ছাড়বো।

তিনি বলেন, এ পত্রিকায় একটা মাফিয়া চক্র গেড়ে বসেছে। তারা এখানে বসে এখনো ফ্যাসিবাদের পক্ষে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে ফ্যাসিবাদের দোসরদের হাত থেকে প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা করতে হবে।   

ভোরের কাগজের সাংবাদিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ডিইউজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম বলেন, মালিকপক্ষ সরকার এবং সাংবাদিক-কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা সরকারের কাছ থেকে সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েও সাংবাদিক-কর্মচারীদের বঞ্চিত করেছে। এই প্রতারণার জবাব তাদের দিতে হবে। আমরা ভোরের কাগজের সহকর্মীদের রুটি-রুজির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আপনাদের পাশে আছি এবং থাকবো। 

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য শাহীন  হাসনাত বলেন, স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদের দোসর শ্যামল দত্তের নাম পত্রিকার প্রিন্টার্স লাইনে এখনো থাকে কি করে! তার নাম প্রিন্টার্স লাইন অবিলম্বে বাদ দিতে হবে। গত ৫ আগস্টের পর এ দোসর দুইবার পালাতে গিয়ে সীমান্তের জনগণের হাতে ধরা পড়েছে। মাফিয়া সরকারের এ সহযোগী যেন আর কখনো ভোরের কাগজে ঢুকতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান বলেন, পত্রিকা বন্ধের পাঁয়তারা করবেন না। বন্ধ করতে হলে আমার সহকর্মীদের সব দেনা-পাওনা পরিশোধ করে তারপর করবেন। অন্যথায় পরিনাম ভালো হবে না। চারিদিক থেকে প্রতিবন্ধতা তৈরি করা হবে। পত্রিকাটিতে কিছু ফ্যাসিবাদের দোসর এখনো গেড়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানো সময় আছে, আপনারা স্বসম্মানে চলে যান। অন্যথায় অসম্মাানিত হয়ে বিদায় নিতে হবে। 

ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসাইন বলেন, কেউ সাংবাদিকদের চেয়ে প্রভাশালী নয়। আমার সহকর্মীদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হলে কাউকে ভালো থাকতে দেয়া হবে না। টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নামিয়ে অপদস্ত করা হবে। শেখ হাসিনার মতো বড় মাফিয়া পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। সহকর্মীদের দাবি-দাওয়া আদায় না হলে সংশ্লিষ্টদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হবে। 

সমাবেশে বক্তব্য দেন, ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য এম মোশাররফ হোসাইন, ভোরের কাগজের সম্পাদকীয় বিভাগের ইনচার্জ সালেক নাসির উদ্দিন, সার্কুলেশন বিভাগের ইনচার্জ তসলিম চৌধুরী, প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন, ডেস্ক নির্বাহী মো. আক্কাছ আলী। উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মুকুল শাহরিয়ার, বিজ্ঞাপন বিভাগের ডেপুটি ম্যানজার নুর মোহাম্মদ স্বপন, কম্পিউটার বিভাগের ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া, আইটি বিভাগের ইনচার্জ মেহেদী হাসান, স্পোর্টস ইনচার্জ শামসুজ্জামান শামস, উৎপাদন বিভাগের ইনচার্জ শরণ হাওলাদার প্রমুখ। এছাড়া মানববন্ধন ও সমাবেশে ভোরের কাগজের সব বিভাগের সাংবাদিক-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়