ডিইউজের লোগো ও বাসস এমডি মাহবুব মুর্শেদ। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেয়া আপত্তিকর ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ চিঠি ৭২ ঘন্টার মধ্যে দুঃখপ্রকাশ করে প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বাসস কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ডিইউজের সংশ্লিষ্ট ইউনিট সভায় এ আল্টিমেটাম দেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
বাসস-এমডি মাহবুব মুর্শেদ ডিইউজেকে দেয়া হুমকিমুলক চিঠির বিষয়ে বিবৃতিতে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে আগামী মঙ্গলবারের (০৪ জানুয়ারি) মধ্যে। অন্যথায় বুধবার (০৫ জানুয়ারি) বাসস কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম। সভার শুরুতে বাসসের বিরাজমান পরিস্থিতি সম্পর্কে উপস্থিত সবাইকে অবগত করেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম।
বক্তারা বলেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ইউনিট সভাকে কেন্দ্র করে বাসস এমডি যে চিঠি ইস্যু করেছে তা চরম দৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই নয়। অবিলম্বে এ চিঠি প্রত্যাহার করে তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বাসস এমডিকে ফ্যাসিবাদের দোসর অ্যাখ্যায়িত করে বক্তারা বলেন, একদিকে আপনি পতিত ফ্যাসিবাদি হাসিনা সরকারের আমলে বাসসে সংগঠিত সকল দুর্নীতি আর অপকর্মকে বৈধতা দিচ্ছেন, অন্যদিকে বাসসের যেসব সাংবাদিক বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আপনি এসব ফ্যাসিস্ট আচরণ বন্ধ করুন। অন্যথায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার মতো আপনার বিরুদ্ধেও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আপনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বাসস-এর এমডিকে ৭২ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বাসস এমডির ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ঐতিহ্য সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সঙ্গে যে দৃষ্টতা দেখিয়েছেন তার জন্য অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে। আগামী মঙ্গলবারের (০৪ জানুয়ারি) মধ্যে বাসস-এমডি যদি ডিইউজেকে হুমকি দেয়া চিঠির বিষয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি না দেন তাহলে বাসস কার্যালয়ের সামনে বুধবার (০৫ জানুয়ারি) সমাবেশ করা হবে।
আল্টিমেটামের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মাহবুব মুর্শেদ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমি কোনো চিঠি পাইনি।
উল্লেখ্য, মাহবুব মুর্শেদকে গত ১৭ আগস্ট দু’বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাকে কবি-সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত করা হয়। প্রজ্ঞাপনে প্রকাশের পর থেকেই তাকে নিয়ে নানা বিতর্ক উঠে সাংবাদিক মহলে।
দায়িত্বপ্রাপ্তির পর তারকর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সাংবাদিকরা। চাউর আছে মাহবুব মুর্শেদ অন্তর্বতীকালীন সরকারের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টার আশির্বাদপুষ্ট।
গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গা ঢাকা দেন রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাটির এমডি আবুল কালাম আজাদ। তার বিরুদ্ধে গণঅভুত্থানে ছাত্রহত্যার মামলা হয়েছে। অন্যদিকে বাসসে দুর্নীতির অভিযোগে আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছে বাসসের জনৈক কর্মকর্তা। ফ্যাসিষ্টের দোসর আখ্যায়িত করে তাকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্যসপদ বাতিল হয়েছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।