ফাইল ছবি
ভোরের কাগজের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে অন্তত ৮ জন সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—এস এম মিজান, রাজিবুল মানিক, নুর মুহাম্মদ স্বপন, তরিকুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, নাজাত ও বেলাল হোসেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় কাকরাইলের এইচআর ভবনের সামনে ভোরের কাগজের সাংবাদিকরা অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ ও চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। তারা ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে ভবনের ভেতরে আগে থেকেই অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে সাংবাদিকরা গুরুতর আহত হন।
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। সংবাদকর্মীরা জানায়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এইচআর ভবন অবরোধ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তসলিম ইসলাম অভি, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, গণঅধিকার পরিষদের ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ওয়ালিউল্লাহ খান, গণফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মিজানুর রহমান।
এছাড়া অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মো. আবু বকর, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
প্রসঙ্গত, ভোরের কাগজ ৮ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেছে’ এমন ঘোষণা দিয়ে সরকার থেকে নয়শ’ টাকা কলাম ইঞ্চি বিজ্ঞাপনসহ সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। অথচ সাংবাদিক-কর্মচারীদের ওয়েজ বোর্ডের বেতন স্কেলের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। এমনকি কোনো নিয়োগপত্র দেয়নি।
কর্মসূচি থেকে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী সমস্ত বকেয়া বেতন-ভাতা ও সার্ভিস বেনিফিট দিতে হবে বলে ১৯ জানুয়ারি ঘোষণা দেয়া হয়। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও ওইদিন জানানো হয়। এরপরই গত ২০ জানুয়ারি একটি নোটিশ টানিয়ে ৩৩ বছরের পুরোনো এ সংবাদপত্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে; যা চলতি বছরের ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
পরদিন ২১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন দাবি মেনে নিতে মালিকপক্ষকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। অন্যথায় মালিকপক্ষের অফিস ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। সে অনুযায়ী ২৩ জানুয়ারি কাকরাইলে কর্ণফুলী গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এইচআর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। ভোরের কাগজ কর্ণফুলী গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি খুলে দেয়া ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সংবাদকর্মীদের নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।