Apan Desh | আপন দেশ

দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পৌঁছাল ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:২৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পৌঁছাল ট্রেন

ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা বহুমুখী সেতুতে সড়ক পথে যানবাহন চালুর পরে এবার রেল চলাচলের জন্য পরীক্ষামূলক চালু হয়েছে ট্রেন চলাচল। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনযাত্রার উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এর মাধ্যমে পদ্মাপাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। দুপুর ১২টি ১৭ মিনিটে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছায়। দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটে ৮২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় ট্রেনটি।

ট্রেনটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্বাগত জানান।

পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি লোকোমাস্টার হিসেবে এনামুল হক এবং সহকারী লোকোমাস্টার হিসেবে এম এ হোসেন ট্রেন চালান। আর গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করেন আনোয়ার হোসেন। পরীক্ষামূলক ট্রেনের যাত্রী হিসেবে পর্যবেক্ষণ করেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। আরও উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, রেলপথ সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়েল মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং রেলওয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প আগামী ১০ অক্টোবর উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী তারিখ দিয়েছেন। এই রেললাইন উদ্বোধনের ফলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ জীবনযাত্রা সহজ হবে।

জানা গেছে, পদ্মা সেতু হয়ে আগামী অক্টোবরেই ঢাকা থেকে ট্রেন যাবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্পের ট্রেন চলাচল। উদ্বোধনের দিন সুধীসমাবেশও হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনো সেটি চূড়ান্ত হয়নি।

আরও পড়ুন <> কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গায় ছুটল ট্রেন

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৪ মে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। এ ছাড়া ৪৩ কিলোমিটার লুপ লাইন (স্টেশনের আগে-পরে বাড়তি লাইন) নির্মাণসহ নতুন ট্রেন চালুর জন্য ১০০টি আধুনিক যাত্রীবাহী বগি কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই পথে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যে কোনো রেলক্রসিং রাখা হয়নি। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত আগের ৬টিসহ ২০টি আধুনিক স্টেশন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। পরে বেড়ে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকায়।

চীনের অর্থায়নে জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ ব্যয় করছে বাংলাদেশ সরকার। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের জুন মাসে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে সাত জোড়া ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে ৫ জোড়া ট্রেন চলবে। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব বলে ধরা হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর সড়ক পথ সাধারণ জনগণের জন্য খুলে দেয়ার পর থেকে রেলওয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেয় মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজে। এরপরও ঢাকা থেকে যশোর অংশের কাজ শেষ করতে না পারায় পুরো পথের পরিবর্তে প্রথমে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 
প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘স্টেশনগুলোর কাজ চলছে। উদ্বোধনের তিন মাসের মধ্যে প্রধান প্রধান স্টেশনগুলো চালু হয়ে যাবে। তখন ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে। আগামী বছর যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে।’

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়