ফাইল ছবি
ঢাকা: আগামীকাল মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে বাণিজ্যিকভাবে এ রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে আগামী মাসে (নভেম্বর)। সে কারণে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৭৭ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে আন্তঃনগর ট্রেনের নন-এসি ৩৫০ টাকা। আর এসি চেয়ার ৬৬৭ টাকা। অথচ রেল কর্তৃপক্ষের বিশ্লেষণেই উঠে এসেছে এসেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত নন-এসি বাসের ভাড়া ২৫০ টাকা। আর এসি বাসের ভাড়া ৫০০ টাকা। ফলে ট্রেনে এই পথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের বাসের চেয়েও বেশি ভাড়া গুনতে হবে।।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাবনায় ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির পেছনে প্রধান দুটি কারণ উল্লেখ করেছে। এর একটি হচ্ছে পদ্মা সেতু, অপরটি গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথ। এই পথের জন্য অতিরিক্ত পথ যোগ করে ভাড়া বেশি ধরা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুকে ১৫৪ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।
অন্যদিকে গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। প্রায় ২৩ কিলোমিটার উড়ালপথকে ১১৫ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এজন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও পদ্মা সেতু ও কেরানীগঞ্জের উড়ালসেতুর জন্য দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫৩ কিলোমিটার। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট বা ঢাকা-রাজশাহী পথের তুলনায় ঢাকা-ভাঙ্গা পথে যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে।
বর্তমানে দেশে লোকাল, মেইল, কমিউটার ও আন্তনগর- এই চার ধরনের ট্রেন চলাচল করে। লোকাল ট্রেনের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৩৯ পয়সা আর আন্তঃনগর ট্রেনের নন-এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ১৭ পয়সা। আর কিলোমিটারপ্রতি এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা।
ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, পদ্মা সেতু ও কেরানীগঞ্জের উড়ালপথের জন্য একটু ভাড়া বেশি হবে। তবে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথ চালু হয়ে গেলে ভাড়া কমে যাবে।
এদিকে রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, এই পথে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করবে। এসব ট্রেনের মধ্যে খুলনা-ঢাকা রুটের আন্তঃনগর ট্রেন চিত্রা, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমান রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করবে।
এছাড়া ঢাকা-কলকাতা রুটের আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করা আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটকেও রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
এদিকে খুলনা থেকে গোয়ালন্দ রুটে চলাচলকারী মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেসকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।