Apan Desh | আপন দেশ

রাজধানীতে গণপরিবহন কম, অফিসগামীদের ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:০২, ২৯ অক্টোবর ২০২৩

আপডেট: ১২:৪৩, ২৯ অক্টোবর ২০২৩

রাজধানীতে গণপরিবহন কম, অফিসগামীদের ভোগান্তি

ছবি: সংগৃহীত

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনের মহাসমাবেশে পুলিশের টিয়ারগ্যাস, গুলি, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপসহ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনায় আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে বিএনপি। হরতালের দিন সকাল থেকেই রাজধানীর সড়ক মহাসড়কগুলো অনেকটা ফাঁকা দেখা গেছে। পূর্ণ কর্মদিবস হলেও সড়কে নেই গণপরিবহন। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। 

পল্টন, ধানমন্ডি, গাবতলি, মিরপুর, উত্তরা, মহাখালী, কারওয়ান বাজার, কুড়িল বিশ্বরোড়, বনানীসহ ব্যস্ত সড়কগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঝে মাঝে দুই-একটি বাস চলছে। ব্যক্তিগত গাড়ি, বিশেষ করে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চোখে পড়ছে। এ ছাড়া রিকশা ও ছোট কিছু যাববাহন চলতে দেখা গেছে। তবে সরকারি গণপরিবহন বিআরটিসির বাসগুলো অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে বেশি চোখে পড়ছে।

গণপরিবহণ কম থাকায় অফিসগামী ও বিভিন্ন গন্তব্যের মানুষজনকে ঠাসাঠাসি করে বাসে উঠতে দেখা গেছে। অনেক স্থানে অফিসগামী মানুষজন দলবেঁধে ভিড় জমিয়ে আসেন বাসের অপেক্ষায়।

ফার্মগেটে সকাল আটটার দিকে কথা হয় মতিঝিলের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে। তিনি বেশ কিছুক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসের জন্য। শাহাদাত বলেন, ‘একটি বাস পেয়েছিলাম। কিন্তু যে ভিড়, উঠতে পারলাম না। বাসে উঠতে একটু ভয়ও ছিল। শুনেছি, শনিবার অনেক বাস পুড়িয়েছে। সিএনজিতে যাব, কিন্তু অনেক বেশি ভাড়া চাইছে।’

ফার্মগেট এলাকায় যেসব বাস এসে থামছিল, সেগুলো প্রায় ঠাসা। বাসগুলো সেখানে খুব কম সময় থামছিল।

রাজধানীর বিজয় সরণি এলাকায় পদচারী–সেতুর নিচে কয়েকজন দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন আকলিমা আক্তার। সঙ্গে তার মেয়ে। যাত্রাবাড়ীতে তার ভাইয়ের বাসায় আছেন অসুস্থ মা। তাকে দেখতে যাবেন। কিন্তু গণপরিবহনের দেখা মিলছে না। আকলিমা বলছিলেন, ‘বাসে উঠতে ভয় পাইতেছি। কিন্তু উপায় নাই। সিএনজি যে ভাড়া চাইতেছে, সেইটা দিতে গ্যালে আম্মার জন্যে ফল কেনা হইবো না।’

আজ বিজয় সরণিতে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি। মাঝেমধ্যে টহল গাড়িগুলোও যাচ্ছে শব্দ করে। পান্থপথ মোড়, সার্ক ফোয়ারা, ফকিরাপুল, রাজারবাগ ও কাকরাইল এলাকায় সকালে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।

সকাল আটটার আগে রাস্তা যত ফাঁকা ছিল, বেলা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য তা বেড়েছে। রাজধানীতে চলা বিভিন্ন রুটের বাস ধীরে ধীরে বাড়ছে।

তেজতুরী বাজারের রিকশাচালক লোকমান মিয়া জানান, তিনি সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে দূরের চার যাত্রী তুলতে পেরেছেন। সর্বশেষ মগবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে ফিরলেন। ভাড়া অন্য দিনের চেয়ে যে বেশি হাঁকছেন, স্বীকার করলেন এই রিকশাচালক।

আরও পড়ুন <> ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন শুরু

প্রসঙ্গত, শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে মহাসমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, সে সময় পুলিশের একটি দল সাঁজোয়া যানসহ এগিয়ে আসতে থাকে নয়াপল্টনের দিকে। সেখানে ছররা গুলি-টিয়ার শেল ছোড়া হয়। আমির খসরুর বক্তব্যের পর পরই সভামঞ্চের মাইক বন্ধ হয়ে যায় এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা বসে পড়েন। ১০ মিনিটের ব্যবধানে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডের তোপের মুখে পুরো এলাকার নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

এরপর বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নেমে যান মঞ্চ থেকে। এ সময় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি হ্যান্ডমাইকে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা-গুলিবর্ষণ এবং অসংখ্য নেতাকর্মী আহত করার প্রতিবাদে রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী হরতাল। তিনি পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের হামলার নিন্দা জানান এবং আজকের হরতাল সফল করার আহ্বান জানান।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়