ছবি: সংগৃহীত
এক সপ্তাহ ধরে কনকনে শীতে কাঁপছে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) পৌষের প্রথম দিন থেকে দুই অঞ্চলে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। হিমেল বাতাসে রাতে বাড়ছে শীতের অনুভূতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোরে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারদিক।
সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছে এসব জেলার গ্রামীণ জনজীবন। রংপুর, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের অন্তত ২১টি জেলায় তাপমাত্রার পারদ নেমে প্রচণ্ড শীত অনুভূত হচ্ছে।
গত তিনদিন ধরে পঞ্চগড়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শৈত্যপ্রবাহের এ ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নয় দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। তার আগে ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় নয় দশমিক নয় ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদফতরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত তিন দিন ধরেই এ জেলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) হিমালয়ের কোলঘেঁষা জনপদ চুয়াডাঙ্গা, দিনাজপুর এবং রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। ২১ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গত আট দিন চুয়াডাঙ্গায় হিমেল হওয়ার সঙ্গে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের উত্তর এবং পশ্চিমাঞ্চলে মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। এসময় দেশের বেশিরভাগ এলাকায় থাকবে প্রচণ্ড শীত।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এখন ঠাণ্ডার অনুভূতি বাড়ছে। ভোর পর্যন্ত ঠাণ্ডা বাতাস থাকায় শীত থাকছে। সকাল থেকে রোদ কিছুটা উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। বিকেলে আবার শীতার্ত বাতাস বইছে।
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ কৃত্রিম আবহাওয়া ভূ-উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে জানান, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা হাঁড় কাপানো ঠাণ্ডা বাতাস ক্রমশ বিস্তার লাভ করছে। খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে আগামী বুধবার পর্যন্ত। এই শৈত্যপ্রবাহ প্রতিদিন দেশের পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আরও পড়ুন <> শীতের দাপট বাড়ছে, আসছে শৈত্যপ্রবাহ
এদিকে সোমবার ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাঁপছে দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। উত্তরের হিমেল বাতাসে রাতে বাড়ছে শীতের অনুভূতি। ভোরে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারদিক। ফলে সকালে যানবাহনগুলো সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। জেলার কৃষি সম্প্রসারণের তথ্যমতে সকাল ৬টায় ঠাকুরগাঁওয়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও গত তিনদিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ১২ থেকে ১৬ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করেছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল চারদিক। সড়কগুলোতে মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনের উপস্থিতিও তেমন ছিল না। যাদের চলাচল করতে দেখা গেছে তারা যানবাহনের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছেন। এদিকে শীতের কারণে জেলার ফসলের ক্ষেতগুলোতেও কৃষকদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। কাজে যাওয়া শ্রমিকদেরও সংখ্যাটিও কম ছিল। জনসমাগম কম ছিল বড় বাজারগুলোতে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।