ছবি : সংগৃহীত
চলতি জানুয়ারি মাসের পুরো সময়জুড়ে থাকতে পারে শীত। তবে আগামী দুই থেকে তিন দিন দেশের উপকূলসহ কয়েকটি এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে এবং থাকতে পারে মেঘ। এতে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে শীত সামান্য কমতে পারে।
এদিকে রাজধানীর তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি চলে গেছে। দিনের সামান্য রোদ হাড়কাঁপানো শীত কমাতে পারছে না। দৃষ্টিসীমাজুড়ে থাকছে কুয়াশা। গা হিম করা শীতল বাতাস বইছে।
অন্যদিকে দেশের চারটি বিভাগ ও চারটি জেলাজুড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। বাকি এলাকাগুলোতে থাকছে তীব্র শীত।
দেশের উত্তরাঞ্চলসহ শীতপ্রবণ এলাকাগুলোতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। নিম্নবিত্ত মানুষেরা আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো শীতপ্রবণ এলাকায় কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বঙ্গোপসাগর থেকে কোথাও কোথাও মেঘ ও বৃষ্টি আসতে শুরু করেছে। খুলনা ও বরিশালের আকাশে মেঘমালা হাজির হয়েছে। ফলে আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দেশের কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। তবে এতে শীতের তীব্রতা খুব বেশি কমবে না।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ খুলনায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চল থেকে উপকূল পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকতে পারে।
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আট দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়া। তবে একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বুধবার সকালে রাজধানী ঢাকায় কুয়াশার দাপট ছিল বেশ। সকাল ৮টার দিকে একবার সূর্য উঁকি দিলেও কয়েক মিনিটের মধ্যে তা কুয়াশার কারণে মিলিয়ে যায়। রাজধানীর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কুয়াশার আধিক্য রয়েছে। ঠাণ্ডার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যানবাহনগুলোকেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়।
অন্যদিকে ঘন কুয়াশার কারণে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাত থেকে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আকাশ ঝাপসা ছিল। স্পষ্টভাবে রানওয়ে না দেখতে পেরে চারটি ফ্লাইট অবতরণ করতে পারেনি বিমানবন্দরে। পরে ফ্লাইটগুলো চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চলে যায়।
জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে শীতের তীব্রতা, দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জেঁকে বসেছে শীত। রাজধানীতে অন্যান্য বছর সেভাবে শীতের দেখা না মিললেও এবছর শীতে জবুথবু নগরবাসী।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, মেঘ দেশের উপকূলীয় এলাকা থেকে রাজধানীসহ মধ্যাঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত হয়ে পড়তে পারে। ফলে এসব এলাকায় তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আগামী দু-এক দিন মেঘ-বৃষ্টি থাকতে পারে। তারপর আবারো শীত বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ছয় দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগজুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজার, ভোলা, কুমিল্লা ও বরিশালে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দু-একটি জায়গা থেকে শৈত্যপ্রবাহ কমে গেলেও অধিকাংশ এলাকায় তা অব্যাহত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। ঢাকা বিভাগের অন্য জেলাগুলোর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল আরও কম, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।
তীব্র শীতের কারণে সৈয়দপুর, রাজশাহী ও যশোর বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। রাজধানী থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে রওনা হওয়া নৌযানগুলোকে ভারী কুয়াশার কারণে ধীরে চলতে হয়েছে। সড়কপথেও কুয়াশা সমস্যা তৈরি করেছে।
আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, ‘দেশের কোনো কোনো এলাকায় রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেলেও দিনের তাপমাত্রা কম থাকায় শীতের তীব্রতা খুব বেশি কমবে না।’
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।