Apan Desh | আপন দেশ

সীমান্তবাসীরা জানে বাঁচতে ঘর ছাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৪৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সীমান্তবাসীরা জানে বাঁচতে ঘর ছাড়ছে

ছবি: সংগৃহীত

কয়েকদিন ধরেই সীমান্তবর্তী মিয়ানমার অংশে ব্যাপক গোলাগুলি ও বোমা বর্ষণ চলছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমারের ২৬২ নাগরিক। তন্মধ্যে ১৫ জন গুরুতর আহত। সীমান্ত পেরিয়ে আসা মর্টারশেলে বাংলাদেশিসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আতঙ্কে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সীমান্তবর্তী সাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘর ছাড়ছেন বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের বাসিন্দারা। সয়-সম্বল নিয়ে পথে পথে তারা। নিজের দেশে বসে পর দেশের আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। এই এলাকার ২৭ পরিবার নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে অনবরত গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৭ পরিবারের ১১৭ জন আশ্রয় নিয়েছেন। নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপন বড়ুয়া। এছাড়া আত্মীয়-স্বজনের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন আরও ২৪০ পরিবার।

আরও পড়ুন>> মিয়ানমারের মর্টারশেলে বাংলাদেশিসহ নিহত ২

এদিন বিকেলে তুমব্রু বাজারে দেখা যায়, এই জমজমাট বাজারের প্রায়ই দোকানপাট এখন বন্ধ। মানুষজনও কম। একটু দূরে বিছনাপত্র অটোরিকশার ছাদে তুলছেন একই বাজারের কোনাপাড়ার শামীম হোসেন। তাকে সহযোগিতা করছেন চালক ইয়াসিন। কাছেই অপেক্ষা করছেন সন্তান কোলে ইয়াসমিন নামের এক নারী। আর তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ননদ খুশবু আকতার।

শামীম হোসেন বলেন, সীমান্তে কেউ নিরাপদ নয়। তাই পরিবারের সদস্যদের উখিয়ার এক স্বজনের বাড়িতে গিয়ে রেখে আসব। আর বাড়ি পাহারা দেয়ার জন্য আমি থাকব। তার কথা শেষ না হতেই আরও তিনটি অটোরিকশা ওই বাজার অতিক্রম করে। অটোরিকশাগুলো ভর্তি আসবাবপত্রে। ভেতরে আছেন শিশুসহ নারীরা।

তাদের বিষয়ে শামীম হোসেন বলেন, ‘ওরা আমার প্রতিবেশী। জীবন বাঁচাতে দূরে চলে যাচ্ছে।’ শুধু তারাই নন, গত তিনদিন ধরে তুমব্রু বাজার সংলগ্ন প্রায় ১০ গ্রামের অধিকাংশই শিশু ও নারী শূন্য।

আরও পড়ুন>> মিয়ানমারের ২৩ ‘বিদ্রোহী’ আটক

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গত তিনদিন ধরে সীমান্তবাসীকে নিরাপদে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেছি। এরই মধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী ২৪০ পরিবার। তাদের মধ্যে প্রায় ১৫০ পরিবার নিরাপদ স্থানের আত্নীয়-স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে।’

‘এই ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামে সীমান্তে ঘেষে ৪০/৪৫ পরিবার বসবাস করে। তাদের মধ্যে ৩০ পরিবার অন্যত্র সরে গেছে। তাদের পরিবারের এক বা একাধিক প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি ঘরবাড়ির ও গবাদি পশুর স্বার্থে বাড়িতে অবস্থান করছে।’

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘ঘুমধুম পরিস্থিতি গতকালের চেয়ে আজ একটু ভালো। আশা করছি, দ্রুত সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা আশ্রয়কেন্দ্র খুলে রেখেছি। আমি কড়জোড়ে সীমান্তবাসীকে অনুরোধ করব, আর কয়েকটা দিনের জন্য আপনারা নিরাপদ স্থানে সরে যান। নতুবা আশ্রয় কেন্দ্রে উঠুন।’

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়