Apan Desh | আপন দেশ

শহীদ মিনারের স্থপতিকে স্মরণ করেনি কেউ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:১৩, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১৭:১৪, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

শহীদ মিনারের স্থপতিকে স্মরণ করেনি কেউ

ছবি: সংগৃহীত

শহীদ মিনারের স্থপতি ও দেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী হামিদুর রহমান। তারই রূপকল্পনায় ফুটে উঠেছিল আজকের এ শহীদ মিনার। আন্দোলনের স্মৃতিমাখা শহীদ মিনারের নকশায় ফুটিয়ে তোলেন তিনিই। তবে শহীদ দিবসে জনতার ঢল শহীদ মিনারে হলেও কেউ স্মরণ করেননি এর স্থপতিকে। আজিমপুরের পুরান কবরস্থানে ভাষা শহীদদের পাশেই তার কবর। তবুও এখন পর্যন্ত (এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত) দেখা যায়নি কোনো শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিন দেখা যায়, কবরস্থানের দক্ষিণ গেটের কিছু ভেতরে গেলেই চোখে পড়বে কালো টাইলসে বাঁধাই করা পাশাপাশি সমাহিত তিন ভাষা শহীদের কবর।

প্রথম কবরটি শহীদ আবুল বরকতের। পাশেই কবি সুফিয়া কামালের কবর। তার একটু দূরে শহীদ মিনারের স্থপতি শিল্পী হামিদুর রহমানের কবর। বরকতের তিনটি কবর পরেই আব্দুল জব্বারের কবর। সেটিও কালো রঙের টাইলস দিয়ে বাঁধানো। তার তিন সারি সামনে খানিকটা সরু পথ পেরুলে আরেক ভাষা শহীদ শফিউর রহমানের কবর। 

প্রতিটি কবরের পশ্চিম দিকে সাদা মার্বেল পাথরের ফলক। তাতে লেখা রয়েছে নাম, পরিচয়, জন্ম ও মৃত্যু তারিখ লেখা। এরমধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ভাষা শহীদদের কবরে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। তবে শহীদ মিনারের স্থপতির কবর একেবারেই ফাঁকা।

অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ করেন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা অনেকেই। সাধারণ মানুষজন বলছেন, সারা বছর মনে করা না হলেও অন্তত এদিন রাষ্ট্রীয়ভাবেই যেন শহীদ মিনারের স্থপতি, ভাষা শহীদদের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যবস্থা করা হয়। অবশ্য আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের কবর রয়েছে এটি জানলেও শহীদ মিনার স্থপতির কবর যে এখানেই, এটি অজানা বলেও মন্তব্য করেন অনেকেই।

ভাষা শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা আব্দুস সবুর খান নামের একজন বলেন, মাত্র এক দশক আগেও ভাষা শহীদদের কবর সম্পর্কে মানুষের এতটা ধারণা ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে এগুলো সম্পর্কে মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছে। তবে এটি যথেষ্ট নয়। আরও বেশি তৎপরতা প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। তাহলেই এসব সোনালী মানুষদের আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শ্রদ্ধাভরে স্মরণে রাখবে।

আরও পড়ুন>> মায়ের ভাষা ফিরে পাওয়ার দিন

মশিউর রহমান নামের একজন বলেন, এখানে এমনিতেই দেখতে এসেছি। ভাষা শহীদদের কবরে ফুল থাকলেও শহীদ মিনারের স্থপতির কবর ফাঁকা। তাকে কেউ মনেই করেনি। 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯২৮ সালে পুরনো ঢাকার ইসলামপুরে হামিদুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মির্জা ফকির মোহাম্মদ ও মাতা জামিল খাতুন। হামিদুর রহমানের চাচা ছিলেন ঢাকার শেষ বাইশ পঞ্চায়েতের নেতা মির্জা আবদুল কাদের সরদার। তার বড় ভাই আবু নাসের আহমদ ছিলেন পূর্ববঙ্গ চলচ্চিত্র সমিতির ব্যক্তিত্ব, মেজ ভাই নাজির আহমেদ ছিলেন পূর্ববঙ্গের চলচ্চিত্র বিকাশের উদ্যোক্তা। আর ছোট ভাই সাঈদ আহমদ ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব ও লেখক। 

১৯৮০ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৮৮ সালের ১৯ নভেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে হামিদুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। চিত্রশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৭ সাল থেকে প্রতিবছর হামিদুর রহমানের পরিবার থেকে তার নামাঙ্কিত হামিদুর রহমান পুরস্কার দেয়া হয়।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়