Apan Desh | আপন দেশ

জাহাজ অপহরণ

জলদস্যুদের দাবি ৫০ লাখ ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:২২, ১৩ মার্চ ২০২৪

আপডেট: ১৬:৫৪, ১৩ মার্চ ২০২৪

জলদস্যুদের দাবি ৫০ লাখ ডলার

ছবি: সংগৃহীত

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। জিম্মি রয়েছেন বাংলাদেশি ২৩ নাবিক। তাদেরকে মুক্তি ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। শিগগিরই না দিলে তাদের একে একে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে এ তথ্য জানা গেছে। এখন জাহাজটির মালিকপক্ষ দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন জিম্মি নাবিকদের স্বজনরা। সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষের কাছে প্রিয়জনকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। জিম্মির পর কয়েকটি ভিডিও বার্তা নাবিকরা পাঠিয়েছে। তবে মুঠোফোন জব্দ করে নেয়ার পর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জিম্মিদের বরাতে পরিবারের দাবি, সোমালিয়ার জলদস্যুরা ২৩ নাবিককে মুক্তি দিতে ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছে।

জিম্মি নাবিক ও জাহাজ উদ্ধার করতে মালিপক্ষ তৎপরতা শুরু করেছে। এমনটা জানা গেলেও তারা মুক্তিপণের অর্থের পরিমাণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বলা হচ্ছে, জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। আলোচনা চলছে। এখনও সুরাহা হয়নি। তবে আশা করা যায়, জলদস্যুদের কবল থেকে নাবিকদের উদ্ধার করে আনা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন>> ‘মুক্তিপণ না পেলে ২৩ জনকে মেরে ফেলবে’

জাহাজটির মালিকপক্ষ চট্টগ্রামের শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম। মঙ্গলবার বিকেল থেকে নাবিকদের স্বজনরা প্রতিষ্ঠানটির আগ্রাবাদ বারিকবিল্ডিং মোড়ের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বুধবার (১৩ মার্চ) সকালেও কান্না জড়িত স্বজনরা প্রতিষ্ঠানটির সামনে জড়ো হন। তারা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলাপ করছেন। একই সঙ্গে নাবিকদের যেকোনো মূল্যে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়েছেন।

নাবিকদের স্বজনদের এমন দাবির মুখে কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেছেন, ‘জাহাজের মালিকপক্ষ নাবিকদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূভাবে শেষ করতে মালিকপক্ষ বদ্ধপরিকর।’ 

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এর আগেও গ্রুপটির জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। তখনও সফলভাবে আলোচনা শেষ করে মালিকপক্ষ নাবিকসহ জাহাজটি উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছিল। অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার আরও বেশি আন্তরিকতার সঙ্গে মালিকপক্ষ কাজ করছে।’

৫ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আলোচনা চলছে। মুক্তিপণ বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। চেষ্টা করা হচ্ছে দ্রুত নাবিকদের ফিরিয়ে আনার। এ মুহূর্তে জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে সর্বশেষ বার্তায় নাবিকেরা জানিয়েছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত নাবিকেরা ভালো আছেন বলে তথ্য রয়েছে।’

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীর কাছে হোয়াটসঅ্যাপে একটি সংক্ষিপ্ত অডিওবার্তা পাঠান। 

অডিওবার্তায় আতিক উল্লাহ খান বলেছেন, ‘এই বার্তাটা সবাইকে পৌঁছে দিয়ো। আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেয়, আমাদের একজন একজন করে মেরে ফেলতে বলেছে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিয়ো।’

মঙ্গলবার দুপুরের পর জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় জলদস্যুরা। এই খবর বাংলাদেশে এসে পৌঁছার পর থেকে জাহাজ মালিক ও নাবিকদের উৎকণ্ঠায় সময় যাচ্ছে। মালিকপক্ষ চায় নাবিকসহ জাহাজটি অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। আর স্বজনরা দাবি করছেন, দ্রুতই যেন নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এ নিয়ে কেএসআরএম’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং কার্যালয় এখন থমথমে অবস্থায় রয়েছে।

কবির গ্রুপের মালিকানাধীন ২৩ জাহাজের একটি এমভি আবদুল্লাহ। এর পণ্য পরিবহন ক্ষমতা ৫৮ হাজার টন। জাহাজটি কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল দুবাই। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজটিতে ২০-২৫ দিনের খাবার রয়েছে। ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি রয়েছে বলে জানা গেছে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়