ছবি: সংগৃহীত
ভারত মহাসাগর থেকে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয় বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আব্দুল্লাহ’। জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলে নোঙর করেছে। জানিয়েছেন নৌ পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম। এদিকে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’র পিছু নিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) মেরিটাইম সিকিউরিটি ফোর্সের একটি যুদ্ধজাহাজ। এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম এবিসি নিউজ।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সকালে অপহরণ হওয়া জাহাজটির উদ্ধার প্রক্রিয়া নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মোহাম্মদ মাকসুদ আলম সাংবাদিকদের জানান, সোমালিয়া উপকূলে নোঙর করেছে জাহাজটি।
তিনি আরও জানান, যেহেতু এখন জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নোঙর করেছে, আমরা আশা করছি, কোনো না কোনো সময়ে অপহরণকারিরা জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। তারপরই আমরা কৌশল ঠিক করবো, কীভাবে আলোচনায় যাবে। এখন আমরা চিন্তা করছি, জাহাজে যারা অবস্থান করছে তারা এবং জাহাজটি যেন নিরাপদ থাকে সে বিষয়টি নিয়ে।
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরোর (আইএমবি) বরাত দিয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশন জানিয়েছে, বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ২০ মাইল দূরে নোঙর করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জিম্মি নাবিক জানিয়েছেন, ‘বুধবার রাতে নেভির একটি জাহাজ আমাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জলদস্যুরা আমাদের হস্তান্তর করেনি। উদ্ধারে আসা জাহাজটি বাইরে থেকে ফায়ার করেছে। তখন জলদস্যুরা বলছে, বাংলাদেশি নাবিকরা জিম্মি আছে। যদি জাহাজ থেকে হামলা হয়, তাহলে নাবিকদের মেরে ফেলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর উদ্ধারে আসা জাহাজ ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে থেকে আমাদের অনুসরণ করছে। আমাদের ক্যাপ্টেনকে তারা জানিয়েছে, তারা আমাদের ফলো করছে।’
তবে উদ্ধারে আসা জাহাজটি সোমালিয়ার কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি ওই জিম্মি নাবিক।
এদিকে, ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের উৎপাত এড়াতে ও প্রতিহত করতে কাজ করে ইইউ’র অপারেশন আটলান্টা। এর অন্তর্ভুক্ত একটি জাহাজই ‘এমভি আবদুল্লাহ’কে ছায়ার মতো অনুসরণ করছে। ইইউ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে, গত ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ নামের বাংলাদেশি জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল দুবাই। পথে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে।
জাহাজটি ছাড়িয়ে আনতে কাজ শুরু করেছে এস আর শিপিং। এজন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। এস আর শিপিংয়ের মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সব সংস্থার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা আমাদের কাজ পরিচালনা করছি। তারা আমাদের যেভাবে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি।’
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।