ছবি : সংগৃহীত
গত ২০২২ সালের তুলনায় দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়েনি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মানুষের গড় আয়ু স্থিতিশীল আছে। ২০২২ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭২ দশমিক তিন বছর। ২০২৩ সালেও একই অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স-২০২৩-এর প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন- পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন- পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস ডিজি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।
মো. আলমগীর হোসেন জানান, ২০২৩ সালে জন্মের সময় প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল অপরিবর্তিত রয়েছে। গত বছর এ হার ছিল ৭২ দশমিক তিন বছর, যা এই বছরও অপরিবর্তিত রয়েছে। জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার এক দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল এক দশমিক ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া, দেশে নির্ভরশীলতার অনুপাত ৫৩ দশমিক সাত শতাংশ। পুরুষদের প্রথম বিবাহের গড় বয়স ২৪ দশমিক দুই বছর এবং নারীদের ১৮ দশমিক চার বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লিতে আগমনের হার ২০ দশমিক চার এবং শহরে আগমনের হার ৪৩ দশমিক চার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রতি হাজারে ছয় দশমিক ৬১ জন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে আট দশমিক ৭৮ জন। আগমন/বহিরাগমন প্রতি হাজারে দুই দশমিক ৯৭ থেকে কমে হয়েছে দুই দশমিক ৩৭ জন।
আরও পড়ুন <> দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ১৫ লাখ, নারী বেশি
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে এক হাজার ১৭১ জন জনসংখ্যা বসবাস করে। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল জন্মহার ১৯ দশমিক চার শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯ দশমিক আট শতাংশ। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার ২০২২ সালে ৫৮ দশমিক ছয় শতাংশ থেকে কমে ২০২৩ সালে হয়েছে ৪৯ দশমিক তিন শতাংশ এবং অস্ত্রোপচার পদ্ধতিতে প্রসবের হার ২০২২ সালে ৪১ দশমিক চার শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৫০ দশমিক সাত শতাংশ।
এ ছাড়া, প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল মৃত্যুহার ছয় দশমিক এক শতাংশ, যা ২০২২ সালে ছিল পাঁচ দশমিক আট শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ এবং প্রতি লাখ জীবিত জন্ম শিশুর বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ১৩৬ জন, যা ২০২২ সালে ছিল ১৫৩ জন। মৃত্যুর শীর্ষ দশ কারণের প্রথম কারণ, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর হার এক দশমিক শূন্য দুই শতাংশ এবং দ্বিতীয় কারণ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ।
তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২২ সালের (৬৩ দশমিক তিন শতাংশ) তুলনায় কিছুটা কমে ২০২৩ সালে হয়েছে ৬২ দশমিক এক শতাংশ। জন্মনিয়ন্ত্রণের অপূর্ণ চাহিদা ২০২২ সালের (১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ) তুলনায় কমে ২০২৩ সালে ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ হয়েছে।
খানার আকার ২০২২ সালের ন্যায় ২০২৩ সালেও অপরিবর্তিত রয়েছে, যা চার দশমিক দুই জন। তবে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নারী খানাপ্রধানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৭ দশমিক চার শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮ দশমিক নয় শতাংশ। অন্যদিকে, পুরুষ খানাপ্রধান ২০২২ সালে ছিল ৮২ দশমিক ছয় শতাংশ, যা ২০২৩-এ কমে হয়েছে ৮১ দশমিক এক শতাংশ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৫৩ শতাংশে।
এ ছাড়া, শিক্ষা, কর্মে কিংবা প্রশিক্ষণে নেই; এমন তরুণের সংখ্যা ২০২২ সালে ছিল ৪০ দশমিক ৬৭ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে ৩৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ হয়েছে। পাঁচ বছরের বেশি বয়সী মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী জনসংখ্যার হার ২০২৩ সালে হয়েছে ৫৯ দশমিক নয় শতাংশ। তবে, ১৫ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এ হার ২০২২ সালের (৭৩ দশমিক আট) তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক দুই শতাংশ। ২০২৩ সালে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৫০ দশমিক এক শতাংশ।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।