ফাইল ছবি
বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে রাখা সোমালিয়ার জলদস্যুদের খুব কাছ থেকে কঠোর পর্যবেক্ষণে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী। সেই সঙ্গে জিম্মি বাংলাদেশিসহ পণ্যবাহী জাহাজটি মুক্ত করতে আল্টিমেটাম দিয়েছে সোমালি পুলিশ।
দেশটির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পাটল্যান্ড পুলিশ বিভাগ বলছে, জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। এই অঞ্চলটি জলদস্যুদের অভয়ারণ্য হিসেবে ধরা হয়। এমন অনিশ্চয়তা এবং সংকটময় পরিস্থিতিতে নাবিকসহ জাহাজের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করে শিপিং লাইনটির মালিকপক্ষ। জাহাজটির মালিক চট্টগ্রাম-ভিত্তিক শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং।
মালিকপক্ষ আশা করছে, সোমালি দস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ নাবিককে ঈদুল ফিতরের আগেই মুক্ত করা সম্ভব হবে।
জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের অস্ত্রের মুখে বন্দি করে রাখা হয় একটি কেবিনে। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা নাবিকদের ওপর কোনো ধরনের শারীরিক নির্যাতন করেনি। তবে অস্ত্রের মুখে তাদের কথা মেনে চলতে বাধ্য করছে দস্যুরা।
শিল্পগোষ্ঠীটির মুখপাত্র এবং মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, সোমালিয়ার জলদস্যুদের সঙ্গে এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তাদের চলমান আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হচ্ছে।
আরও পড়ুন <> ঈশ্বরদীতে ৭ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল
তিনি আরও বলেন, এটি অনানুষ্ঠানিক একটা যোগাযোগ হলেও, জলদস্যুরা তাতে ভালোভাবে সাড়া দিয়েছে। আমাদের নাবিকদের তারা নিজ নিজ কেবিনে থাকতে দিচ্ছে, জাহাজের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে অংশ নিতে দিচ্ছে, এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দিচ্ছে। এসব খুবই ইতিবাচক লক্ষণ। মোটকথা, আলোচনা চলাকালীন জলদস্যুরা আমাদের নাবিকদের সঙ্গে ভালো আচরণই করছে।
মিজানুল ইসলাম বলেন, (মুক্তিপণের জন্য) দস্যুরা যোগাযোগ করবে– এটি অনুমান করে আমরা আগে থেকেই সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এরপর তাদের ফোনকল পাওয়ার পরে, এটি যে দস্যুদের থেকেই এসেছে– সেবিষয়ে নিশ্চিত হয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি। শান্তিপূর্ণভাবে এই সংকটের সমাধান করে নাবিকদের দেশে ফিরে আসা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা আশা করছি, ঈদের আগেই সুস্থ অবস্থায় নাবিকদের উদ্ধার করা যাবে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ক্যাপ্টেন শাখাওয়াত হোসেন এমভি আবদুল্লাহর সকল নাবিক সুস্থ ও নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের আলোচনা প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসময় লাগলেও মালিকপক্ষের জোর প্রচেষ্টার থাকলে অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের উদ্ধার করাও সম্ভব।
এর আগে সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অপহরণ করা জাহাজ নিয়ে দস্যুরা আন্তর্জাতিক নৌশক্তি ও সোমালি পুলিশের চাপের মুখে রয়েছে।
সোমালিয়ার নুগাল অঞ্চলের পুলিশ কমান্ডার মোহাম্মদ আলী আহমেদ বলেন, জাহাজটি রয়েছে জিফল এলাকার উপকূলে। ডাঙ্গা থেকে জলদস্যুদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান চলছে, যাতে তারা বাইরের কারো সাহায্য না পায়। এসময় সাগরে বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেন, যারা অপহৃত জাহাজের ওপর নজর রাখছে।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।