ছবি : সংগৃহীত
নওগাঁর পোরশা সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আল আমিন (২৭) ও লালমনিরহাটের দুর্গাপুর দীঘলটারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া বাংলাদেশি যুবক লিটন পারভেজের (২২) মরদেহ ফেরত দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) রাত ৯টার দিকে হাঁপানিয়া এলাকায় সীমান্তের ২৩৬ মেইন পিলারের কাছে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আল-আমিনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। নিহত আল-আমিন উপজেলার নীতপুর গ্রামের কলনীমোড় এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।
অপরদিকে একইদিন মধ্যরাতে হাতীবান্ধা উপজেলার জাওরানী সীমান্তে লিটন পারভেজের মরদেহ ফেরত দেয় ভারতীয় পুলিশ। বাংলাদেশ (বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত লিটন পারভেজ ওই এলাকার দীঘলটারী সাংকাচওড়া গ্রামের মোকছেদুল হকের ছেলে। নওগাঁ ১৬ বিজিবির নিতপুর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মাহফুজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন <> এফআর টাওয়ারে আগুন: পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
প্রথম ঘটনায় নিহতের স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাতের কোনো একসময় আল আমিন আরও কয়েকজনের সঙ্গে নিতপুর সীমান্ত এলাকার ২৩২ নম্বর প্রধান স্তম্ভের (মেইন পিলার) পাশ দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। গরু নিয়ে নিতপুর সীমান্তের মিলমারী এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার সময় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ভারতের মালদহ জেলার বিএসএফ ১৫৯ ব্যাটালিয়নের আগ্রাবাদ ক্যাম্পের জওয়ানরা তাদের ধাওয়া করেন।
এ সময় অন্যরা পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও আল আমিন গুলিবিদ্ধ হন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিএসএফের সদস্যরা আল আমিনের মরদেহ নিয়ে যায়। মঙ্গলবার দুপুরে নিতপুর সীমান্ত ফাঁড়ির কাছে শূন্যরেখায় বিএসএফ ও বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে মরদেহ ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
নিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, আল আমিন ভারত থেকে গরু আনা-নেয়ার কাজ করতেন। টাকার বিনিময়ে রাখাল হিসেবে ভারত থেকে গরু নিয়ে আসতেন। মঙ্গলবার ভোরে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফ সদস্যরা তাদের তাড়া করেন। অন্যরা পালিয়ে আসতে পারলেও আল আমিন পারেনি। বিএসএফের গুলিতে ঘটনাস্থলেই আল আমিন মারা যান।
দ্বিতীয় ঘটনায় গত মঙ্গলবার দুর্গাপুর সীমান্ত পিলার নম্বর ৯২৩ পাশ দিয়ে কয়েকজন সতীর্থসহ গরু আনার জন্য ভারতের প্রবেশ করেছিল লিটন। এ সময় ভারতীয় ৭৫ বিএসএফ ব্যাটেলিয়ন রারথার বিওপি ক্যাম্পের টহলের সামনে পড়ে যায় তারা। পাচারকারীদের দেখে বিএসএফ সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়লে লিটন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। সতীর্থরা তাকে ফেলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। পরে আহত লিটনকে বিএসএফ সদস্যরা তাদের বিওপি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিটন মিয়া মারা যায়।
আপন দেশ/এমআর/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।