ডোনাল্ড লুকে সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান খন্দকার মাসুদুল আলম, ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার, আর্থিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকালে ঢাকায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতিবিনিময় সভায় এসব বিষয়ে জানতে চেয়েছেন ডোনাল্ড লু। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসায় এ মতবিনিময় সভা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ডোনাল্ড লু নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে নির্বাচন–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিবেশ কেমন, নাগরিক সমাজ কোন অবস্থায় কাজ করছে ইত্যাদি। আলোচনায় মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গও আসে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন— ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর উইমেন ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, মানবাধিকারকর্মী নুর খান, চাকমা সার্কেলের রানি ও মানবাধিকারকর্মী ইয়ান ইয়ান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্দোলনের সংগঠক সোহানুর রহমান, তরুণ সংগঠক মাহমুদা আক্তার (মনীষা) প্রমুখ।
মতবিনিময় সভা শেষে বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সোহানুর রহমান বলেন, নির্বাচন–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন <> কোরবানির আগেই বাড়ল মসলার দাম
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিল। নির্বাচন হয়ে গেছে, সরকার তার মতো করে কাজও করছে। এমন পরিস্থিতিতে এমন চাপ কেন; এমনটি তারা আশা করেননি। এটি উদ্বেগের।
আলোচনায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং পরবর্তী সময়ে প্রণয়ন করা সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রসঙ্গও আসে। এ বিষয়ে শোনার পর ডোনাল্ড লু নিজের উদ্বেগের কথা জানান।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা বন্ধ এবং এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা প্রায় সবাই ফিলিস্তিন পরিস্থিতির নিন্দা জানান এবং এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন। পাশাপাশি তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনিদের সহমর্মিতায় আয়োজিত বিক্ষোভ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের শ্রম অধিকারের বিষয়েও জানতে চেয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিকনেতা কল্পনা আক্তার বলেন, শ্রম আইনের সংস্কার ও তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মীদের বেতন নিয়ে আন্দোলনের সময় যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলোর পরিস্থিতি সম্পর্কেও ডোনাল্ড লু জানতে চেয়েছেন।
তিন দিনের সফরে ডোনাল্ড লু সকালে কলম্বো থেকে ঢাকায় আসেন। তাকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগ) খন্দকার মাসুদুল আলম।
বিমানবন্দর থেকে ডোনাল্ড লু সরাসরি বারিধারায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে যান। সেখান থেকে তিনি পিটার হাসের বাসায় মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। সন্ধ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসায় নৈশভোজে অংশ নেন।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।