পুরোনো ছবি
দেশের ইতিহাসের অন্যতম বড় দুর্ঘটনা ধরা হয় নিমতলী ট্র্যাজেডিকে। ১২৪ জন মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া সেই হৃদয়বিদারক দিনের ১৪ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১০ সালের ৩ জুন রাজধানীর নিমতলিতে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছিলেন দুই শতাধিক মানুষ। আগুনের লেলিহান শিখায় ছাই হয়ে যায় পুড়ে ২৩টি বসতবাড়ি, দোকানপাট ও কারখানা।
ভয়ানক সে দিনে বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসী দেখেছিল নির্মম এক দৃশ্য। আপনজনকে চোখের সামনে পুড়তে দেখেছেন অনেকেই।
৩ জুন রাত সাড়ে ১০টায় লাগা ওই আগুন জ্বলেছিল তিন ঘণ্টারও বেশি সময়। আগুন নিয়ন্ত্রণ, নির্বাপনের পর শুরু হয় উদ্ধার কাজ। নিহতদের কঙ্কালসার নিথর দেহ, আর্তনাদ জড়িত আহতদের একে একে উদ্ধার করে উদ্ধারকারীরা। ৪ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার কাজ শেষ হয়। মর্মান্তিক এ ঘটনায় কেঁদে উঠেছিল সারাদেশ। সরকারের পক্ষ থেকে ৫ জুন রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনার পর যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ পায়, তাতে উঠে আসে আগুন লাগার মূল কারণ। রাসায়নিকের গুদামে থাকা দাহ্য পদার্থের কারণেই সেই ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিদগ্ধ নিমতলি তার ক্ষত সারিয়ে উঠলেও এখনও সেখানেই রয়ে গেছে অজস্র কেমিক্যাল গোডাউন। নিমতলী ট্রাজেডির পর টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল রাজধানী থেকে রাসায়নিকের গুদাম-কারখানা সরিয়ে দেয়ার। গঠন করা হয় দুইটি কমিটিও।
সেই কমিটি কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে জায়গা ঠিক করার সুপারিশ করে। একই সঙ্গে উচ্চ মাত্রার বিপজ্জনক পাঁচ শতাধিক রাসায়নিকের তালিকা করে শিল্প মন্ত্রণালয়কে প্রতিবেদন জমা দেয়৷
তবে কাজির গরুর মতো সব কিছুই এখনও রয়ে গেছে কেতাবে। বাস্তবায়ন হয়নি কিছুই। পঞ্জিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে কেটে গেছে ১৪ বছর৷ মাঝে সেই পুরান ঢাকারই চুড়িহাট্টায় ঘটে গেছে আরেক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ইসলামবাগে আগুনের ঘটনাও নিয়মিত। তবে কোনোভাবেই পুরান ঢাকা থেকে সরানো যাচ্ছে না কেমিক্যালের গোডাউন।
জানা গেছে, রাজধানীর পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের গুদাম ও দোকান রয়েছে প্রায় ২২ হাজারের বেশি। এর মধ্যে অনুমোদন বা লাইসেন্স আছে মাত্র ৮০০টি গুদামের। এছাড়া বসতবাড়িতে অরক্ষিতভাবে রাখা হচ্ছে বিভিন্ন কেমিক্যাল।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।