ছবি: সংগৃহীত
ঈদুল আজহার বাকি মাত্র একদিন। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন অসংখ্য মানুষ। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে বাস টার্মিনালগুলোতে ইতোমধ্যে যাত্রীদের ঢল নেমেছে। এ সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। তবে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লস হলেও এক টাকা ভাড়া অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে না।
শনিবার (১৫ জুন) রাজধানীর রাজধানীর মহাখালী, গাবতলী বাস টার্মিনালে এমনই চিত্র দেখা যায়। প্রধান সড়কের সামনের ফুটপাত ও কাউন্টারগুলোর সামনে বাড়ি ফেরা মানুষদের ভিড় সব থেকে বেশি। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে হাজারো মানুষ ও শত শত দূরপাল্লার যানবাহন। এছাড়া যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অন্যদিকে বাসগুলোর কর্মীদের হাঁকডাক দিতে দেখা গেছে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা মূলত বেসরকারি চাকরি করেন তারাই আজ ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছেন। শনিবার বাধ্যতামূলক অফিসে হাজিরা দিতে হবে, তাই কোনরকম হাজিরা দিয়েই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন অনেকে। আর সরকারি চাকরিজীবীদের অধিকাংশই শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় আগেই নিজ নিজ গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছেন।
আরও পড়ুন>> রাজধানীর হাটে পশুর সরবরাহ বেশি, দামও চড়া
মহাখালী বাস টার্মিনালে ঢুকতেই ময়মনসিংহগামী এনা পরিবহনের কাউন্টারে দেখা গেল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কেউ কেউ টিকিটের জন্য ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এরপর কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা পরিবহন কাউন্টারে গিয়েও দেখা যায় যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। তাদের প্রত্যেকেই ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ ফিরছেন। একইচিত্র জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও টাঙ্গাইলগামী বাসগুলোর কাউন্টারেও।
রাজিব আহমেদ নামে এক যাত্রী বলেন, ঈদের আগে জামালপুর রোডে প্রচুর যানজট হয়, যাত্রীদের ভিড় দেখে মনে হচ্ছে আজও এরকমটাই হবে। কাউন্টার এসে দেখি প্রচুর মানুষের ভিড়। যে সময়ে কাউন্টার এসেছি, অনেক দূর চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু এনা পরিবহনের গাড়ির এখনো সিরিয়ালে আছি।
গাবতলী থেকে মো. আরমান পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ফরিদপুর যাচ্ছেন গোল্ডেন লাইন পরিবহনে। তিনি বলেন, অন্য সময় ৩৫০ টাকা ভাড়া হলেও আজ নিচ্ছে ৫০০ টাকা। ভেঙে ভেঙে কম খরচে যেতে পারতাম। কিন্তু সঙ্গে রোগী থাকায় ভেঙে গেলাম না।
চাকরিজীবী আমিনুল হক বলেন, প্রতি ঈদেই পরিবহনের লোকেরা ভাড়া বেশি নেয়। চার্টের কথা বলে, এ চার্টেই থেকেও ভাড়া বেশি রাখা হয়েছে।
গাবতলীর সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো. আহমেদ হাওলাদার বলেন, আমাদের ভাড়া বেশি রাখার সুযোগ নেই। বিআরটিএ, পুলিশ, মিডিয়া সবাই আছে। এক টাকা বেশি রাখার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন>> ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১১ কিমি যানজট
গাবতলীর হানিফ এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো. জুয়েল হায়দার বলেন, আজ যাত্রীদের চাপ নেই। রোববার চাপ হতে পারে। এখানে আগের মতো যাত্রীদের চাপ নেই। বেশিরভাগ যাত্রী এখন সায়দাবাদ হয়ে যাচ্ছে। শিডিউল অনুযায়ী আমাদের গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে।
মহাখালির অনন্যা পরিবহনের টিকেট কাউন্টারে দায়িত্বরত রফিকুল ইসলাম বলেন, পুরোদমে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ভোর পাঁচটা থেকেই যাত্রীরা কাউন্টারে আসতে শুরু করছেন। প্রতিটি বাসই একদম পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তবে কিশোরগঞ্জ থেকে আসা বাসগুলোর এখন সিট ফাঁকা রেখেই ঢাকায় ঢুকছে।
ভাড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমরা কোন বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি না। মালিক সমিতি থেকে কড়া নির্দেশ, লস হলেও এক টাকা ভাড়া অতিরিক্ত নেয়া যাবে না।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।