Apan Desh | আপন দেশ

সংসদে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি এ. কে. আজাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ২৩ জুন ২০২৪

আপডেট: ০০:১০, ২৪ জুন ২০২৪

সংসদে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি এ. কে. আজাদের

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ. কে. আজাদ

জাতীয় সংসদে ঋণখেলাপিদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ. কে. আজাদ। একই সঙ্গে তিনি সরকারের এত সংখ্যক মন্ত্রণালয় ও দফতরের সংখ্যার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে একটি প্রশাসনিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। 

রোববার (২৩ জুন) সংসদের বৈঠকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে একাধিক সদস্য কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার পদ্ধতির সমালোচনা করেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এ. কে. আজাদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। মূলত তার পরিমাণ ৫ লাখ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা কারা নিল। তাদের নাম ১২ বছরের বালক থেকে শুরু করে সবাই জানে। 

স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার জন্য তাদের নাম সংসদে প্রকাশে অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারাই ব্যাংকের টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে। এখন যদি ১৫ শতাংশ কর দিয়ে তাদের টাকা আনতে দেয়া হয়, এটা হবে অন্যায়-অবিচার। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছে- দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’। তাহলে কীভাবে এ রকম একটা সার্বভৌম পার্লামেন্ট ১৫ শতাংশ কালো টাকা উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না, কীভাবে বৈধতা দিতে পারে, তা বোধগম্য নয়। যারা করদাতা তাদের ৩০ শতাংশ দিতে হলে ওদের কেন দিতে হবে না। কেন বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না।

এ. কে. আজাদ বলেন, এবারের বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে জনপ্রশাসন খাতে ব্যয় বাজেটের ২২ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। অথচ উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এখানে প্রশ্ন, স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা করে একটা মন্ত্রণালয়কে বাজেটের ২২ শতাংশ দিয়ে দেয়া হলে, এটা শরীরের চেয়ে মাথা ভারী হয়ে যাচ্ছে। 

ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, আয় বুঝে ব্যয় করতে হবে। সারা বিশ্বে মন্দা চলছে। মূল বাজার ইউরোপ আমেরিকা তারা কিনতে পারছে না। যার ফলে আমাদের রফতানি নেতিবাচক।

তিনি বলেন, একজন দায়িত্বশীল প্রাক্তন মন্ত্রী গতকাল সংসদে বলেছেন- প্রশাসনের একটা বিরাট অংশ যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এবং তাদের বিচার হওয়া উচিত। 

এ. কে. আজাদ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানে স্মার্ট বাংলাদেশ ঘোষণা করেছেন, সেখানে এনালগ রাষ্ট্র চলতে পারে না। এতগুলো মন্ত্রণালয়, দফতর দরকার আছে কিনা, সেটা দেখার জন্য একটি প্রশাসনিক কমিটি করা হোক। তারা অডিট করে সরকারকে প্রস্তাব দিক এত মন্ত্রণালয়, অধিদফতর ও সরকারি কর্মকর্তা দরকার আছে কিনা।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে এসি ল্যান্ড ও ইউএনওদের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে গাড়ি কেনা হচ্ছে। অথচ প্রতিবেশী ভারতে মন্ত্রীরা নিজস্ব তৈরি গাড়িতে চলাফেরা করে। তাতে কি তাদের মান-সম্মান কমে যায়? এখন ভাবার সময় এসেছে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চললে সামনের বছর বাজেটের আকার আরও কমাতে হবে।

‘আজ যে দুঃসময় পাড় করতে হচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবে এ সমস্যা আরও প্রকট হবে। এ ব্যাপারে সবাইকে ভাবতে হবে।’

স্বতন্ত্র এ সংসদ সদস্য বলেন, ২০ জুন প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ক্যাপিটাল মেশিনারি বা মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে বা স্বল্প পরিসরে চলছে। তাহলে এই অবস্থায় কীভাবে বিনিয়োগ বাড়বে?

দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ দিন দিন কঠিন হচ্ছে। ঋণের সুদহার বিদ্যুৎ জ্বালানির অপর্যাপ্ততা পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত উদ্যোক্তারা। অথচ বিনিয়োগ টানতে পাশের দেশ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য নানামুখী প্রণোদনা দিচ্ছে। বলে এ এমপি।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়