ফাইল ছবি
প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে এ প্রস্তাব বাতিল হচ্ছে। ফলে শুল্ক ছাড়াই গাড়ি আমদানি করতে পারবেন এমপিরা।
জানা গেছে, এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা বাতিল করতে ১৯৭৩ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার সংশোধন করতে হবে। এর পরই এ ধরনের গাড়ি আমদানিতে কর আরোপ করা যাবে। সংসদের চলতি অধিবেশনে এ ধরনের কোনো বিল উত্থাপন হয়নি। ফলে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা বহালই থাকছে।
এছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের কর অবকাশ সুবিধা বাতিল করে করারোপ করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এ প্রস্তাবও বাতিল হচ্ছে।
আর কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক করার বিধান শুধু সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। যারা সিটি কর্পোরেশনের বাইরে কমিউনিটি সেন্টার বা হল ভাড়া করবেন, তাদের রিটার্ন জমার স্লিপ দিতে হবে না। তবে বিতর্কিত ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে এ বাজেটে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা কাটছাঁট করে ২৫ শতাংশ শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। বাজেট বক্তৃতায় এ আইন পরিবর্তন করে শুল্কমুক্ত সুবিধা কমানোর বিষয়েও প্রস্তাব দেন। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এ আইন পরিবর্তন হচ্ছে না।
একই সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চলে শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহার করে ১ শতাংশ শুল্কারোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থাপনার যন্ত্রপাতি আমদানিতেও শুল্কারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবে সংশোধন আনা হচ্ছে। বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ প্রস্তাব বাতিল করা হচ্ছে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগের দেয়া কর সুবিধা অব্যাহত থাকছে। নতুন করে অর্থনৈতিক অঞ্চলে করারোপ করা হবে না।
এছাড়া ১৫ শতাংশ কর দিয়ে ব্যক্তি ও কোম্পানির কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে বিস্তর অভিযোগ, সমালোচনা রয়েছে। তবুও তা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। অনেকেই ব্যক্তি খাতে এ সুবিধার বিপক্ষে ছিলেন। সংসদে এ আইন অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, বাজেটে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে শুল্কারোপ করতে না পারা খুবই দুঃখজনক। একটা সিম্বলিক উদ্যোগ ছিল, সেটাও বাজেটে রাখতে পারল না। এখানে টাকার পরিমাণও বেশি ছিল না, যা এমপিদের জন্যও লজ্জাজনক।
প্রস্তাবিত বাজেটের পরিবর্তন বিষয়ে গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এনবিআর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী এসব পরিবর্তনের ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছেন।
সংশোধনীসহ অর্থবিল বৃহস্পতিবার সংসদে অর্থ আইন হিসেবে পাস হওয়ার কথা রয়েছে। গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের সময় ধীরে ধীরে কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে যেতে আইন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি মূলত এমপিদের গাড়ি আমদানিতে শুল্ক ও ভ্যাট বসানোর প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয় প্রত্যাখ্যান করার পর এ কথা বলেছিলেন।
বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী এমপিদের গাড়ি আমদানি প্রসঙ্গে বলেন, সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব ধরনের শুল্ককর অব্যাহতি আছে। সব স্তরে অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য সবাইকে রাজস্ব দিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনে শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির নীতিতে কিছুটা পরিবর্তন মহৎ দৃষ্টান্ত হবে। এ উদ্দেশ্যে এমপিদের গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে অব্যাহতির সুবিধা পরিবর্তন করা যেতে পারে। এ লক্ষ্যে এমপিদের (পারিশ্রমিক ও ভাতা) আদেশ ১৯৭৩-এ সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করছি।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।