ছবি: সংগৃহীত
মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৭ হাজার কর্মীর টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ টাকা ফেরত দেয়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মালয়েশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে এক সভায় তিনি একথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১০০টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠায়। তাদের কারও ১০ জন, কারও ৫০ জন, কারও ৫০০ জন, কারও ৪০০ জন কর্মী যেতে পারেনি। আমরা এগুলো নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সঙ্গে বসেছি। তাদের মতামত জানতে যে তারা টাকা নিল কিন্তু পাঠাতে পারল না। এ টাকার কী হবে তাদের কাছে বুধবার জানতে চেয়েছি। তারা সবাই সম্মত হয়েছে যে প্রমাণ সাপেক্ষে যার কাছ থেকে যত টাকা নেয়া হয়েছে সেটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দেয়া হবে। এ একটি ধাপে আমরা মোটামুটি এগিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে আমরা চেষ্টা করছি গরীব মানুষের টাকাটা ফেরত দেয়ার। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে বলেছি। এ সময়ের মধ্যে যে টাকা দিতে পারবে না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এর পরে গিয়ে অন্য ব্যবস্থা। প্রথমে টাকা উদ্ধার হোক।
চক্র তৈরি করে কর্মী পাঠানোয় অনিয়মের ঘটনায় চার বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালে বাংলাদেশিদের জন্য আবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলে। তখন আবারও চক্র গড়ে ওঠে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চে মালয়েশিয়া জানায়, দেশটি আপাতত আর শ্রমিক নেবে না। যারা অনুমোদন পেয়েছেন, ভিসা পেয়েছেন, তাদের ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে হবে।
এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে (রিক্রুটিং এজেন্সি) টাকা দেয়া বহু মানুষ বিপদে পড়েন। সময় হাতে না থাকায় উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই তারা বিমানবন্দরে ভিড় করেন।
মালয়েশিয়া সরকার ১৫টি সোর্স কান্ট্রির জন্য নতুন এ বিধিনিষেধ আরোপ করে। দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ তাদের ওয়েবসাইটে একটি নোটিশ প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ ছিল, ৩১ মে মালয়েশিয়া ভিসা অ্যাপ্লিকেশন হ্যান্ডলিং এজেন্সি পরিষেবাটি বন্ধ করা হবে। ফলে, ই-ভিসা পাওয়া প্রায় ১৭ হাজার বাংলাদেশি কর্মী সকল প্রক্রিয়া শেষ করার পরেও দেশটি যেতে পারেনি।
মত বিনিময় সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, টাকা ফেরত পাওয়ার পর আগামীতে যখন মালয়েশিয়া কর্মী নেবে তখন অগ্রাধিকার তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ মাসের শেষে মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে, সেখানে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর রাস্তা আবার উন্মুক্ত হবে।
শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে দেখি কী পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়। যারা দিতে ব্যর্থ হবে কিংবা অনিহা প্রকাশ করবে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছি সেটিও আপনারা জেনে যাবেন।
তদন্ত কমিটির অনুসন্ধান প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ার যারা নিয়োগকর্তা তারাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডিমান্ড দিতে দেরি করেছে। অনেকে আবার ভিসা পেয়েছে দেরিতে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কর্মীর টাকা ফেরত দেয়া। তাদের আবার মালয়েশিয়া হোক কিংবা অন্য দেশে হোক তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।
আপন দেশ/এমবি/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।