ছবি: আপন দেশ
প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে শনিবার (১০ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে সাড়ে তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভের মুখে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রধান বিচারপতি মো. ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করেন। এ প্রধান বিচারপতিকে সঙ্গে নিয়ে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র চলছিল। জুডিশিয়াল ক্যু করার কথা ছিল।
আর এ ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। এ জুডিশিয়াল ক্যুয়ের পরিকল্পনার তথ্য পেয়ে যান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা। তাদের দেয়া তথ্য পেয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে এ তথ্য জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ। সেখানে পোস্টটি করেন সহসমন্বয়ক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ। ‘ষড়যন্ত্র ফাঁস’ শিরোনামে তিনি তার টাইমলাইনে যা লিখেছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের নেপথ্যে কঠিন ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। শেখ হাসিনাকে এক্স প্রধান বিচারপতি সিনহা যেভাবে অবৈধ ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন, ঠিক তেমনি ষড়যন্ত্র করেছিল ওবায়দুল হাসানসহ কয়েকজন।
যে রিপোর্ট এখনও মিডিয়া প্রকাশ করেনি তা নিম্নরূপ:
সজীব ওয়াজেদ জয় এতদিন আপনাদের সাথে ‘আমি নাই, মা নাই’ বলে বলে হঠাৎ গতকাল (শনিবার) রয়টার্সকে বলেছেন তার মা পদত্যাগ করেননি। এটি একটি পরিকল্পিত ঘোষণা ছিল যা বোঝা গেছে আজ (১০ আগষ্ট)।
সেনাবাহিনীর নিচের দিকের অফিসাররা যদি জনগণের পক্ষে না থাকত, তাহলে আজকে আরেকটা রক্তের বন্যা বয়ে যেত। আজকেও সেনাবাহিনীর ছোট অফিসাররা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে ছাত্র জনতাকে বাঁচিয়েছে।
আজকে একটা ক্যুয়ের প্ল্যান করেছিল জয় এবং আরাফাত। কিন্তু সঠিক সময়ে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা ছাত্রদের কাছে তথ্য ফাঁস করে দেয়। এ তথ্য জানার পরে ’জুডিশিয়াল ক্যু’ রুখে দেয় ছাত্ররা।
জয় আরাফাত আর তাদের গাইডদের গোপন প্ল্যান ছিল এরকম। ড. মোহাম্মদ ইউনুস যখন রংপুরে আবু সাঈদের বাড়ি পরিদর্শন এবং কবর জিয়ারতের জন্য যাবেন এবং তারপর উনার হেলিকপ্টার যখন আকাশে থাকবে, ঠিক সে সময়ে হাইকোর্টের অ্যাপিলিয়েড ডিভিশনের বিচারপতিরা ফুল কোর্ট বসিয়ে এ অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করবেন।
সাথে সাথে এ ক্যুয়ের সাথে জড়িত সেনাবাহিনীর ২৫ কর্মকর্তা, চাকরি থেকে কর্মবিরতিতে থাকা দুর্নীতিবাজ পুলিশের একটি দল রাজধানীতে হট্টগোল শুরু করবে আর শেখ হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে আসবেন এবং সাথে সাথে আওয়ামী লীগের আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা মাঠে চলে আসবেন।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রধান বিচারপতি সরকারের সাথে কোনো আলোচনা না করে হঠাৎ ৫৭ বিচারপতিকে জরুরি মিটিংয়ে ডাকেন। স্ক্রলে জরুরি মিটিং ডাকার সংবাদ দেখে দর্শকরাও কনফিউজড হন। কিন্তু আগে থেকে গোপন খবর পাওয়া ছাত্র জনতা সকাল ৯টার আগেই চতুর্দিক থেকে ছুটে এসে হাইকোর্ট ঘেরাও করে।
সেনাবাহিনীর সমর্থনে প্রধান বিচারপতি পিছু হটতে বাধ্য হন এবং পালিয়ে থাকেন। মিটিং স্থগিত হয়। ছাত্ররা বিচারপতির বাসা ঘেরাও করে রাখে। সেনাবাহিনী শৃংখলা রক্ষার আবরণে সেখানে ছিল। পদত্যাগপত্র সরকারকে দেয়া হয়েছে নিশ্চিত হয়ে ছাত্ররা হাইকোর্ট এবং বাসভবন ত্যাগ করে।
এ ঘটনার সাথে জড়িত আপিল বিভাগের আরও পাঁচজন বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার এক্স হ্যান্ডেলে লিখেন, বিক্ষোভকারীরা সুপ্রিম কোর্টে হামলা এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। তারা আদালতের পদত্যাগ দাবি করে এবং তারা নিয়োগের জন্য লোকদের নামের তালিকা সরবরাহ করে।
অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দাবি মেনে নেয় এবং বিক্ষোভকারীদের দেয়া নামে বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। একটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত কীভাবে কোনো যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া, নির্বাচিত সংসদ ছাড়া পরিবর্তন করা যায়? এটা সংস্কার নয়, এটি গণঅরাজকতা। বাংলাদেশে কোন আইনশৃঙ্খলা নেই যখন এমনকি সুপ্রিম কোর্টও নিরাপদ নয়।
আপন দেশ/এইউ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।