ফাইল ছবি
শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে পাহাড়সম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বৈরাচারের দোসর লাকীর দুর্নীতির সহযোগী ছিলেন অ্যাকাডেমির ১০ কর্মকর্তা।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তাদের ওএসডি করা হয়েছে। যুক্ত করা হয়েছে নিজ নিজ বিভাগ থেকে প্রশাসন বিভাগে। অ্যাকাডেমির জনসংযোগ বিভাগ এ তথ্য জানায়। আদেশে স্বাক্ষর করেছেন অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
আদেশে বলা হয়, পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত কর্মকর্তারা প্রশাসন বিভাগে সংযুক্ত থাকবেন।
ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- সংগীত নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের সহকারী পরিচালক খন্দকার ফারহানা রহমান, অর্থ হিসাব ও পরিকল্পনা উপবিভাগের উপপরিচালক মো. এ. এম. মোস্তাক আহমেদ, মহাপরিচালকের পিএস (সহকারী পরিচালক) আবু ছালেহ মো. আবদুল্লাহ, নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. চাকলাদার মোস্তফা আল মাসউদ, অর্থ হিসাব ও পরিকল্পনা উপবিভাগের সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ আল হেলাল, কালচারাল অফিসার সৈয়দ সাহিদা বেগম, কালচারাল অফিসার মো. আসফ উদ-দৌলা, কালচারাল অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) হাসান মাহমুদ এবং মহাপরিচালকের দপ্তরের কালচারাল অফিসার সাদিয়া বিনতে আফজল।
ওএসডি হওয়া কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কিছু কর্মকর্তার দেয়া তালিকা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এটি তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে বলে দাবি করেন ওএসডি কর্মকর্তারা।
তারা অভিযোগ করেন, প্রথমে অন্যায়ভাবে আমাদের কক্ষে তালা দেয়া হয়। নামফলকও খুলে ফেলা হয়েছে। অফিস করতে গেলে আমাদেরকে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এরপর গত সপ্তাহে কক্ষ খুলে দিলেও কার্যত সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এখন কোনো যৌক্তিক কারণ দর্শানো ছাড়াই ওএসডি করে দেয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ওই দিনই ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর দুর্নীতিবাজ সাবেক মহাপরিচালকের মদদপুষ্ট ও তার নানা দুর্নীতির সহযোগী ১৫ জন কর্মকর্তার কক্ষে তালা দেয় ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর মধ্যে নিজ নিজ কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টাকালে তারা বেশ কয়েকবার ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধাওয়া খেয়েও পালিয়ে যান।
টানা ১৩ বছরের বেশি সময় মহাপরিচালকের দায়িত্বে থেকে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সংস্কৃতিকর্মীদের ক্ষোভের মুখে গত ১২ আগস্ট পদত্যাগ করেছেন মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। গত ৯ সেপ্টেম্বর মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান নাট্যনির্দেশক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
এদিকে, শুধু ওএসডিকে সাধারণ শাস্তি বলে মনে করছেন স্বৈরাচার আমলে লিয়াকত আলী লাকী বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলেন, ওএসডি করেই গুরু পাপে লঘুদণ্ড দেয়া হয়েছে। দুর্নীতিবাজ সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সকল দুর্নীতির দোসর হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তারা।
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।