আপন দেশ
তুমুল বৃষ্টিতে রাজধানীর সড়কে সড়কে পানি জমেছে। এ বৃষ্টি থামার কোনো নাম নেই। সড়কে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমরসমান পানি। এতে সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বেশি। জলাবদ্ধতা করণে সড়কে বেঁধে গেছে যানজট।
শনিবার (৫ অক্টোবর) টানা বৃষ্টির করণে রাজধানীর কাকরাইল, নয়াপল্টন, শান্তিনগর, মোহাম্মদপুর, মালিবাগ, সায়দাবাদ’সহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আমান উল্লাহ বলেন, ভোর থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারণে স্কুলে যেতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানলাম, আমার সহপাঠীরাও স্কুলে যেতে পারেনি।
অফিসগামী কবির হুসাইন বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টি। মালিবাগ রোডে ৩০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করেও রিকশা পায় না। পরে পেলেও ভাড়া অনেক বেশি। বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে অফিসে আসি। রিক্সায় থাকা সত্ত্বেও যানবাহন চলাচল করা ঢেউ আমার গায়ে আছড়ে পড়ছে।
সড়কে হাঁটু পানি হওয়ায় দেখা যাচ্ছে না উচু-নিচু স্থান। ফলে রিক্সা উল্টে যাওয়া ও বাইক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রাজধানীর অধিকাংশ স্থানে ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকায় বেড়েছে দুর্ঘটনা। মানুষ হাঁটু পানি উপেক্ষা করে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। সড়কে যানবাহন কম থাকায় পায়ে হেঁটে কর্মস্থালে পোঁছাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাস্তায় মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি।
টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কের পাশাপাশি ফুটপাতও তলিয়ে গেছে পানিতে। পানি নিষ্কাশনের অধিকাংশ চ্যানেল অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে দোকানপাটেও পানি উঠে যাচ্ছে। সড়কে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। কাজেও যোগ দিতে পারছেন না মানুষ।
ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার শিকার রাজধানীবাসি, সমাধান কী?
এ ব্যাপারে পরিকল্পনাবিদ হিসাম উদ্দীন চিশতী গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিবেচনা করে নগরায়নটা হয়নি। নগরায়নটা হয়েছে পুরোপুরি কংক্রিটের ড্রেন নির্ভর। এখানে যেসব খাল ছিল আমরা তা অবাধে ভরাট করছি। নিচু জায়গাগুলো অবাধে ভরাট করা হচ্ছে। বাকি খালে কী থাকে? এ নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন একটি প্রদর্শনী করেছিল। তাতে দেখা যায়, খালে জুতা থেকে শুরু করে বিছানা-বালিশ-তোষক, সবই পাওয়া গেছে। আসলে আমাদেরকে এ দৃষ্টিভঙ্গিটা পাল্টাতে হবে। শুধু আরও ড্রেন বানিয়ে, নতুন প্রকল্প করে এ সমস্যার সমাধান করা যাবে না।
নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, খালগুলো আমরাই দখল করেছি। বর্জ্যও ফেলছি যেখানে সেখানে। যে ড্রেন পানি সরার পথ হিসেবে বানানো হয়েছে, তা আমরা ময়লা ফেলার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছি। আর তাতে ফেলছি কঠিন বর্জ্যগুলো। এ মানসিকতার আসলে পরিবর্তন দরকার।
জলাবদ্ধতার সমাধান প্রসঙ্গে হিসাম উদ্দীন চিশতী বলেন, এলাকা ভাগ করে পানি জমা করার জায়গা বানাতে হবে। ভবনগুলোতেও এ ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। সেখানে অবশ্য এত বেশি পানি ধরবে না। কিন্তু আমাদের দরকার জলাধার। আমরা হয়তো হাতিরঝিল বানাতে পারব না। কিন্তু আমরা হাতিরঝিলের মতো মিনি জলাধার বানাতে পারব। এ জন্য কর্তৃপক্ষের অ্যাপ্রোচের পরিবর্তন দরকার।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।