ছবি: সংগৃহীত
গণঅভ্যুত্থানে আহত ১২২ জন আর্থিক অনুদান পেয়েছেন। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তাদের এ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে। রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের মধ্যে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। মোট ১২২ জনকে জনপ্রতি ১ লাখ টাকা করে ১ কোটি ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ৩০ জনের মধ্যে ২৩ জনকে জনপ্রতি ১ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। বাকি সাতজনের নাম সম্পূর্ণ না থাকায় তাদের বিকাশের মাধ্যমে শনিবারই (১২ অক্টোবর) টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ৩৩ জনের বিকাশে এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ৫৯ জনের বিকাশে টাকা দেয়া হয়েছে।
এ পর্যন্ত জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে ১৭৬ আহতকে মোট এক কোটি একাত্তর লাখ বিয়াল্লিশ হাজার পঞ্চাশ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এর আগে উপদেষ্টা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের বর্তমান অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ফাউন্ডেশন থেকে আন্দোলনে আহত-নিহতদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। বিষয়টি চলমান রয়েছে। আহতদের বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, উসকানিদাতা ছিল এবং গণহত্যার সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এর বাইরে অন্যায়ভাবে কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হলে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। যদি কোনো সাংবাদিক বা তার পরিবার মনে করে যে, মামলার মাধ্যমে তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের সহযোগিতা করব।
আহত-নিহতদের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি লিগ্যাল টিম কাজ করছে। আমরা স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে এ বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব।
গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে তারা দেশের বীর সন্তান। আন্দোলনে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছে, তাদের সে আত্মত্যাগকে আমরা স্বীকৃতি দেই। আমরা অনুরোধ করব, শহীদ এবং আহতদের যেন আমরা কোনো দল বা ব্যানার দিয়ে ভাগ করে না ফেলি। আমরা যেন তাদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা মেডিকেলে আসার আগে অনেকে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন- তাদের সে খরচ আমরা দেব।
এ সময় আহত জামাল হোসেন বয়স্কদের মাসিক ভাতা এবং তরুণদের চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন।
আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় মামলা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, দ্রুতই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে। আন্দোলনকারীদের হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যরা যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন তাদের ছাড় দেয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।
ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এ যাবত ফাউন্ডেশন থেকে আহতদের প্রদান করা অনুদানের হিসাব সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।