ছবি: আপন দেশ
সারাদেশে রোববার (২৩ অক্টোবর) বিজয়া দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়। পরে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য হলো মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি—কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা—বিসর্জন দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
গত ৯ অক্টোবর চণ্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মাধ্যমে ষষ্ঠী তিথিতে শুরু হয়েছিল শারদীয় দুর্গোৎসব। এরপর টানা পাঁচ দিন ধরে সারাদেশের পূজামণ্ডপগুলোতে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজা শেষ হয়।
এ বছর দেবী দুর্গার আগমন ঘটে দোলায় বা পালকিতে। যা শাস্ত্রমতে মড়কের সংকেত বহন করে। অন্যদিকে দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। যার ফলাফল হয় ছত্রভঙ্গ। এটি সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পূর্বাভাস দেয়। যা যুদ্ধ ও বিপ্লবের সম্ভাবনা নির্দেশ করে।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী দুর্গা ফিরে গেলেন কৈলাসে, স্বামী শিবের গৃহে। তবে তিনি আবারও ফিরে আসবেন পরবর্তী শরতে, তার বাবার বাড়িতে। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীতে সারিবদ্ধভাবে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। একই সময়ে রাজধানীর তুরাগ নদীতেও বিসর্জন চলতে থাকে। নিরাপত্তার জন্য সড়কে পুলিশের টহল এবং নদীতে নৌপুলিশের টহল দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিসও এ সময় দায়িত্ব পালন করে।
দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের করা হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে ভক্তরা ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে পলাশীর মোড়ে এসে সমবেত হন। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমা বিসর্জন না দেয়া হলেও পূজায় ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা এবং ঘট বিসর্জন দেয়া হয়।
এ বছর সারাদেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ঢাকায় ২৫২টি মণ্ডপে পূজা উদযাপিত হয়।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।