বঙ্গভবনের সামনে আজও বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। ছবি-আপন দেশ
বঙ্গভবনের সামনে আজও বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। তারা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায়। বঙ্গভবনের প্রধান গেটের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবির সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে বঙ্গভবনের প্রধান গেটের সামনের সড়কে এচিত্র দেখা গেছে। সকাল থেকে ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিক্ষোভকারী মোজাম্মেল মিয়াজি বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে এ রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্র তার কাছে আছে। আর এখন বলছেন, তার কাছে পদত্যাগপত্র নেই। তার মানে সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করছেন। হাসিনা যখন গণহত্যা চালিয়েছে, তখন সাহাবুদ্দিন কোনও শিক্ষার্থীকে দেখতে যাননি। আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষও নেননি। এ রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চেয়ারে থাকলে দেশের মানুষের রক্ত চুষে খাবে। তাই সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা বঙ্গবভন ছেড়ে যাবো না।
এর আগে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন। এর মধ্যে আছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন ব্যানারের নেতাকর্মীরা। তবে আজ তেমন কোনও সংগঠনের ব্যানার দেখা যায়নি। বিকেল ৪টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের একাংশ তারেক রহমানের নেতৃত্ব একটি দল বঙ্গবভনের সামনে আসার কথা থাকলে তারা আসেনি। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ‘জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের’ ব্যানারে একটি মিছিল বঙ্গবভনের সামনে আসে। এ সময় তারা বঙ্গবভনের সামনে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। প্রায় ২০ মিনিট বিক্ষোভ করে তাদের মিছিলটি ৫টা ৫০ মিনিটে দৈনিক বাংলা মোড় দিয়ে চলে যায়।
ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার দোসর। ছাত্র-জনতার সরকারে তার থাকার কোনও অধিকার নাই। অবিলম্বে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে। সাহাবুদ্দিন খুনি হাসিনার দোসর হলেও আমাদের রাষ্ট্রপতি। তাকে আমরা সম্মান করি। তাই তাকে বলতে চাই, আপনি সসম্মানে চলে যান। ছাত্র-জনতার সরকারে আপনার দরকার নাই। নিজের সম্মান রক্ষার্থে আপনি নিজে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় জনগণ আপনাকে ছাড়বে না। আপনাকে গদি থেকে টেনেহিঁচড়ে নামানো হবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একাধিক ব্যক্তিকে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে বসে থাকতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে সাব্বির আহম্মেদ নামে এক শিক্ষার্থী জানান, তারা তিন জনই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এখানে আসেন। তারা মোট সাত জন এখানে সারা রাত অবস্থান করেন। কয়েকজন অসুস্থবোধ করায় চলে যান। কিন্তু তারা তিন জন রয়ে গেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা এখান থেকে যাবেন না।
সায়েদাবাদ থেকে জাহানারা নামে এক গৃহিণী রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গবভনের সামনে আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি বলেন, আমি সায়েদাবাদ থেকে এখানে এসেছি শিক্ষার্থীদের সাপোর্ট দিতে। খুনি হাসিনার নির্বাচিত কোনও ব্যক্তিকে এ জনগণের সরকারে রাখা যাবে না। তাছাড়া রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের মানুষ মারছে, শত শত শিক্ষার্থীকে হত্যা করছে। তবে তিনি একটি সম্মানজনক চেয়ারের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার উচিত সম্মান নিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা।
এদিকে বঙ্গবভনের সামনে মঙ্গলবারের তুলনায় আজ নিরাপত্তা বেষ্টনি জোরদার করতে দেখে দেছে। কাঁটাতারের ব্যারিকেডের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।