আটক ভুয়া চিকিৎসক পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে এক ভুয়া চিকিৎসক পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা (২২) আটক হয়েছে। তিনি নিজেকে চিকিৎসক পরিচয়ে বিভিন্ন রোগীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। পাপিয়া প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ঢামেকের চিকিৎসক পরিচয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
রোববার (১৭ নভেম্বর) হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিভাগে এক রোগীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার সময় তাকে আটক করা হয়।
জানা যায়, মুখে টিউমারজনিত সমস্যার কারণে গত বুধবার হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি হন কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা নুরুল আলম। আটক পাপিয়ার সঙ্গে তার স্ত্রী কল্পনা এক আত্মীয়ের মাধ্যমে হাসপাতালে পরিচিত হন। পাপিয়া নিজেকে তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও জুনিয়র চিকিৎসক পরিচয় দেয়। নিয়মিত চিকিৎসকের অ্যাপ্রোনও পড়ে থাকত।
কল্পনা অভিযোগ করেন, অপারেশন দ্রুত করিয়ে দেবে বলে পাপিয়া ৩০ হাজার টাকার চুক্তি করে। সে চুক্তির ২৮ হাজার টাকা আগেই নিয়ে নেয়। বাকি ২ হাজার টাকা নিতে রোববার তাদের ওয়ার্ডে এসেছিল।
আটক পাপিয়া নিজেকে ভুয়া চিকিৎসক স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, রোগী আমার পরিচিত। তাকে দ্রুত অপারেশন করিয়ে দেয়ার জন্য ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের কাছে নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৭৮ ব্যাচের স্টুডেন্ট পরিচয় দিয়েছিলাম। তবে ওয়ার্ডটিতে স্বর্ণা নামে দায়িত্বরত আরেক নারী চিকিৎসক ছিলেন। তিনি আমার বিস্তারিত পরিচয় জানতে চান। তখনই তারা বুঝে ফেলেন আমি এখানকার স্টুডেন্ট না।
আটক ভুয়া চিকিৎসক পাপিয়ার বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার নলুয়া গ্রামে। বাবার নাম আনোয়ার হোসেন বাদল। মনোহরদীর একটি কলেজ থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এক বছর আগে জসিম উদ্দিন নামে এক যুবককে বিয়ে করে। তাকে নিয়ে বকশিবাজারে এলাকায় থাকেন। স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করে।
এদিকে স্ত্রী আটক হওয়ার খবর শুনে হাসপাতালে উপস্থিত হন পাপিয়ার স্বামী জসীম উদ্দীন। স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা দাবি করে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী কেন এ কাজ করেছে আমি কিছুই জানি না। আমি এতদিন পর্যন্ত জানতাম সে মেডিকেল স্টুডেন্ট। আমার কাছেও পরিচয় লুকিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. ফারুক জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুয়া চিকিৎসক স্বর্ণাকে আটক করে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে। পরবর্তীতে আমরা ওই তরুণীকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছি। তারা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।