ছবিটি ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময়কার।
ঢাকা শহরে দিন দিন বেড়ে চলেছে নৈরাজ্য-বিশৃঙ্খলা। বিভিন্ন আন্দোলনে ঢাকা শহর অচলাবস্থা। আজ সকালে আগারগাঁও চৌরাস্তা ও ডেমরা এলাকায় দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরের পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে।
সকালে ফেসবুকের 'ট্রাফিক অ্যালার্ট' গ্রুপে জীবন আহমেদ নামে একজন জানান, আগারগাঁও চৌরাস্তা বন্ধ করে রিকশাওয়ালাদের আন্দোলন শুরু হয়। এ রাস্তা এড়িয়ে চলুন।একই সময় ওই এলাকায় আসিফ খান শাওন নামের একজন লিখেছেন, আগারগাঁও এড়িয়ে চলুন। গুলশান যাওয়ার পথ থেকে ফিরে এলাম। আগারগাঁওয়ের পর যাওয়া যাচ্ছে না।
সকালে আগারগাঁওয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নেন। ফলে পুরো এলাকাতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে ঢাকার দক্ষিণ-পূর্বে ডেমরা এলাকায় তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। যার কারণে ওই এলাকার যান চলাচলও অচল হয়ে পড়ে।
এ ধরনের সংঘর্ষ ও বিক্ষোভের ঘটনা ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন নয়। সম্প্রতি রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন ও সংঘর্ষ নিয়মিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, ২০২৪ সালের আগস্টে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারীরা দাবির জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার মতো নানা কৌশল গ্রহণ করছেন। যার ফলে পুরো শহরের যানবাহন ও জনচলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।
অন্যদিকে ঢাকার মানুষ এখন সামাজিক মাধ্যমের ‘ট্রাফিক অ্যালার্ট’ গ্রুপগুলোতে সকাল থেকেই উদ্বেগের পোস্ট করতে শুরু করেছেন। কেউ অভিযোগ করছেন, তারা নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মী বা মালিকের অপসারণের জন্য, কেউ চুরি বা চিকিৎসায় ভুলের অভিযোগে রাস্তা বন্ধ করতে দিচ্ছেন। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে রাজধানীজুড়ে দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকতে হচ্ছে। আর রাজধানীর যানবাহন চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট রয়েছে।
সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের লাগাম টেনে ধরা জরুরি। জনচলাচল ও স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে যে ভীতি তৈরি হয়েছে। তা দূর করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি কারও যৌক্তিক দাবি থাকে, তবে তা সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় আলোচনা করে সমাধান করা দরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের বিক্ষোভ ও রাস্তা অবরোধের কারণে ঢাকায় প্রতিদিনের চলাচলে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে। যানবাহন ও জনসাধারণের জন্য একেবারে অচল হয়ে পড়ছে রাস্তা-ঘাট। ফলে শহরের সাধারণ জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
প্রসঙ্গত, ঢাকার রাস্তা অবরোধ, সংঘর্ষ, বিক্ষোভের ঘটনাগুলো এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে তা রাজধানীর শৃঙ্খলাকে চরমভাবে প্রভাবিত করছে। রাস্তায় অতিরিক্ত যানবাহন আটকা পড়ছে। যার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেড়ে চলছে অপপ্রচার। যাতে করে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। সেজন্য এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।