অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবারের (৪ ডিসেম্বর) বৈঠকে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিবের সঙ্গে উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীরও ছিলেন।
প্রেস সচিব বলেন, বুধবার তিনি সব রাজনৈতিক দল এবং পরদিন বৃহস্পতিবার তিনি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বসবেন।
শফিকুল আলম আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সবার সঙ্গে সংলাপের আহ্বান করেছেন। তিনি তাদের সঙ্গে বসবেন। বৈঠকের উদ্দেশ্য জাতীয় ঐক্য। তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলার প্রেক্ষাপটে ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পরপরই এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি স্বীকারও করেছিলেন, দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিত মাত্রায় নেই।
এরমধ্যে গত ২৫ নভেম্বর হিন্দু সাধু চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার করার পর উত্তেজনা আরও বাড়ে। দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাল্টাপাল্টি বিবৃতির পর তা রাজপথে বিক্ষোভেও গড়িয়েছে।
সোমবার (২ডিসেম্বর) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় এমনই এক বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশ মিশনে হামলা হয়। হামলাকারীরা দূতাবাসে ভাংচুর চালানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের পতাকাও পোড়ায়। সে ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলেন ড. ইউনূস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে অপতথ্য বন্ধে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেদেশের সরকারের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, আগস্টের শেষের দিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা হয়, সেখানে অধ্যাপক ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আসার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করুন, তারা বাংলাদেশে এসে দেখুক প্রকৃত ঘটনা কী বা সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে কি না বা আদৌ এমন ঘটনা ঘটছে কি না?
বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য চালানোর কারণেই আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে দাবি করে শফিকুল বলেন, এটার জন্য দায় চাপাব ভারতীয় গণমাধ্যমকে। এ গণমাধ্যম কোনও তথ্য নিশ্চিত হওয়া ছাড়া মিথ্যা অপতথ্য ছড়াচ্ছে। তারা আগেই নির্ধারণ করে দিচ্ছে, বাংলাদেশে কী হচ্ছে? ফলে ভারতীয় জনগণ সহিংসতা করছে।
শুধু ভারতেরই নয়, আন্তর্জাতিক সব সংবাদমাধ্যমকেও বাংলাদেশ পরিস্থিতি দেখার আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। তিনি বলেন, অপতথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল, প্রবাসী সবাই মিলে সোচ্চার হওয়া উচিৎ। অপতথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে আমাদের পুরো জাতিকে একটা কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।