Apan Desh | আপন দেশ

বাংলাদেশের অংশ থেকে যেভাবে হাতছাড়া হলো আসাম

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৩:০২, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৪:০০, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের অংশ থেকে যেভাবে হাতছাড়া হলো আসাম

ফাইল ছবি

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম আসাম। যা আয়তনে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য। ঐতিহাসিকভাবে আসাম ছিল অবিভক্ত বাংলার একটি অংশ। নানা কারণেই এটি বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়ে উঠেছিল। তবে প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে আসাম ভারতের অংশ হলো? আসামের মানুষ কি আজও বাংলাদেশে যুক্ত হতে চায়। অবিভক্ত বাংলা গড়ে তুলতে চায়? আসুন জানা যাক ইতিহাসের কিছু অজানা দিক ও বর্তমান পরিস্থিতি।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় আসাম পূর্ব বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। যার রাজধানী ছিল ঢাকা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে পূর্ববঙ্গ ও আসামকে নিয়ে তখন নতুন প্রদেশ করা হয়। এর পেছনে কারণ ছিল তৎকালীন অর্থনৈতিক বৈষম্য। পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতার হিন্দু ধর্মী সম্প্রদায়ের সুদৃষ্টি কখনোই ছিল না পূর্ববাংলা বা আসামের মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর।

ফলে অর্থনীতি রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হত এ অঞ্চলের মানুষের। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের সময় আসামকে বাংলা থেকে আলাদা করে ভারতের প্রদেশ করা হয়। খোদ ভারতীয় অনেক ইতিহাসবিদদের মতেও আসাম কখনোই ভারতের অংশ হওয়ার কথা ছিল না।

ভারতীয় গবেষক চন্দ্রশিখর গুপ্তের লেখা বই থেকে জানা যায়, ভারতের মানচিত্রে উপহার হিসেবে আসামকে দিয়ে গেছে ব্রিটিশ সরকার। এসময় বাংলা থেকে আসাম, উড়িষ্যাকে বিভক্ত করা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শরৎ বসু। কিন্তু এ দুই নেতা পরে জানতে পারেন দিল্লিতে বাংলা ও আসামকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিল। তখন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও ভারতের জহুরুলাল নেহেরুর সম্মতি ক্রমেই অবিভক্ত বাংলাকে ভাগ করে পূর্ববাংলাকে পাকিস্তানের ভাগে ও আসাম,ত্রিপুরাকে ভারতের ভাগে দেওয়া হয়। 

বিশ্লেষকদের মতে, তৎকালীন নেতাদের দূরদর্শীতার অভাবে পাকিস্তানকে অনেক অংশ থেকে বঞ্চিত হতে হয়৷ যার ফল আজও ভোগও করছে পূর্ব বাংলার মানুষ তথা বাংলাদেশ ও আচ্ছা আসাম, ত্রিপুরার মানুষ। শিলিগুড়ি করিডরে পূর্বে অবস্থিত হওয়ার ফলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সুদৃষ্টি কখনোই পাইনি আসাম-ত্রিপুরার মত অঞ্চল। যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘাটতি থাকায় এত বছরেও আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি এসব অঞ্চলে। অবস্থানগত দিকে থেকে ভারতের হলেও আসামে রয়ে গেছে অসংখ্য বাঙালি ও বাঙালি বংশোদ্ভূতরা। আসামের দাপ্তরিক ভাষা অসমিয়ার পাশাপাশি বাংলা রাখার দাবিতে পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছেন ১১ জন বাঙালি।

সম্প্রতি ভারত সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তে এসব বাঙালিদের অভিহিত করা হচ্ছে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে। প্রায় ১৯ লাখ হিন্দু-মুসলিম বাঙালি জনগণকে চিহ্নিত করা হয়েছে আসামের অবৈধ বাসিন্দা হিসেবে। ফলে ১৯৪৭ সালে আসামকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে ক্ষোভ দানা বাধছে আসামের বাসিন্দাদের মধ্যে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়