Apan Desh | আপন দেশ

‘ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে টিউলিপ হেনস্তা করান’

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৬:০২, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

‘ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে টিউলিপ হেনস্তা করান’

ব্যারিস্টার আরমান ও টিউলিপ।

২০১৭ সালে নিখোঁজ হন ব্যারিস্টার আরমান। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ব্রিটিশ এমপি ও শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। চ্যানেল-৪ এর এক সাংবাদিক টিউলিপকে জানান, একটি ফোন কল দিলে হয়তো আরমান মুক্তি পেতে পারেন।

এ বিষয়ে টিউলিপ সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন করেন, আরমান কি তার সংসদীয় এলাকার কেউ বা ব্রিটিশ নাগরিক? টিউলিপ আরও বলেন, আমি ব্রিটিশ এমপি। আমার জন্ম লন্ডনে। আমাকে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ বলার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

সাংবাদিক টিউলিপের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনার খালা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আপনার একটি ফোন কল হয়তো অনেক পার্থক্য আনতে পারে। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে টিউলিপ বিষয়টি এড়িয়ে যান।

পরবর্তীতে তিনি তার ক্ষমতা ও প্রশাসনকে দিয়ে আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করান বলে অভিযোগ রয়েছে।

ব্যারিস্টার আরমান ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, চ্যানেল-৪ প্রতিবেদনটি প্রচার করার কয়েক ঘণ্টা আগে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমার বাড়িতে যায়। আমার স্ত্রীকে চুপ থাকতে বলে। বাইরের দেশের কার কার সঙ্গে আমার স্ত্রীর যোগাযোগ আছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে। তাকে এমনভাবে হেনস্তা করে যেন কোনো সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমার ব্যাপারে টিউলিপকে জিজ্ঞেস করার বিষয়টি কোনোভাবে যেন শেখ পরিবারকে আঘাত করেছিল। এ কারণে প্রশাসন থেকে এমন আচরণ করা হয়েছিল।

চ্যানেল-৪ এর সাংবাদিক ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে যান। তাকে ব্যারিস্টার আরমান সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, আপনার একটি ফোন কল অনেক পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। তখন ওই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন টিউলিপ। 

তিনি তাকে উল্টো জিজ্ঞেস করেন, আরমান কী তার সংসদীয় আসনের কেউ? তিনি কী ব্রিটিশ’? জবাবে সাংবাদিক বলেন, আরমান বাংলাদেশি। তার পরিবার আপনার কাছে একাধিকবার অনুরোধ করেছে কিছু করার জন্য। টিউলিপ বলেন, আপনি কী জানেন আমি ব্রিটিশ এমপি ও আমার জন্ম হয়েছে লন্ডনে। 

চ্যানেল-৪ এর সাংবাদিক বলেন, কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আপনার গভীর সম্পর্ক আছে। আপনি নিজেই বলেছেন আপনি আওয়ামী সরকারের মুখপাত্র। আপনার খালা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

ওই মুহূর্তে টিউলিপ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আপনি কী বলতে চান আমি বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ? আমি ব্রিটিশ এমপি। আমাকে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ বলার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। এটি বলে তিনি চলে যেতে থাকেন। তখন ওই সাংবাদিক বলতে থাকেন, আপনি আরমানের ব্যাপারে একটি ফোন দিতে পারবেন না? কেন পারবেন না।

ব্যারিস্টার আরমান লন্ডনে পড়ালেখা করেছেন। ২০১৬ সালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বাবার বিচার চলাকালে তিনি তার আইনজীবীর ভূমিকা পালন করছিলেন। ঠিক তখনই তাকে গুম করা হয়।

আরমানের ব্রিটিশ আইনজীবী মাইকেল পলক বলেছেন, চ্যানেল- ৪ কে যেন ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করতে। সেজন্য তার বাড়িতে ওইদিন র‌্যাবের সদস্যরা গিয়েছিল। দেখুন আপনি একজন ব্রিটিশ এমপিকে একটি বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, এরপরই র‌্যাবের মতো বাহিনীর কাছ থেকে হুমকি পেয়েছেন। যেটি হত্যা ও গুমের সঙ্গে জড়িত।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস টিউলিপ সিদ্দিক ও তার দল লেবার পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু কেউই কোনো কথা বলেননি। তবে টিউলিপের এক সহযোগী বলেছেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ব্যারিস্টার আরমানের বিষয়টি নিয়ে ফরেন অফিসে পত্র পাঠিয়েছিলেন তিনি।

জামায়াত নেতা মীর কাসিমের ছেলে আহমেদ বিন কাসেম ব্যারিস্টার আরমান ২০১৬ সালে গুম হয়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হলে দীর্ঘ আট বছর পর বাড়ি ফেরেন তিনি। সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। 

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়