Apan Desh | আপন দেশ

রাজধানীতে প্রকাশ্যে দুই ব্যবসায়ীকে কোপাল দুর্বৃত্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৯:০৪, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১০:৫৮, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

রাজধানীতে প্রকাশ্যে দুই ব্যবসায়ীকে কোপাল দুর্বৃত্তরা

ছবি : আপন দেশ

রাজধানীর ব্যস্ততম এলিফ্যান্ট রোডের ‘মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের’ সামনে দুই কম্পিউটার ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। সবাই চেয়ে চেয়ে দেখলেও কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। অথচ খুব কাছেই ছিল পুলিশ ফাঁড়ি, সামনে ও পেছনে ছিল ট্রাফিক বক্সও।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে শনিবার (১১ জানুয়ারি) এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

হামলার শিকার ব্যবসায়ীদের নাম  এহতেসামুল হক (৪২) ও ওয়াহিদুল হাসান দীপু। এদের মধ্যে এহতেসামুল হকের অবস্থা গুরুতর। তিনি ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত অপর ব্যক্তি দীপু প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

আহত ওয়াহিদুল এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক। আর এহতেসামুল হক মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক।

কমিটি নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব, পানি ও ইন্টারনেট সরবরাহ, পার্কিং ও ফুটপাত দখলের চেষ্টা ও চাঁদাবাজিতে বাধা দেয়ায় এই দুই নেতার ওপর হামলা চালানো হতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। 

হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচার দাবিতে শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে এলিফ্যান্ট রোডে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মাল্টিপ্ল্যান মার্কেটের সামনে ৪-৫ জন মিলে এহতেসামুলকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করছে। পাশে দাঁড়িয়ে আছে আরও ৬-৭ জন। সবাই মুখোশ পরা। চাপাতির আঘাতে এহতেসামুল রাস্তায় পড়ে যান। এর পরও তার ওপর কোপ চালানো হয়। তিনি ওঠার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু হামলাকারীদের আঘাতে উঠতে না পেরে এক পর্যায়ে সড়কে শুয়ে পড়েন। তখনও আঘাত করতে থাকে দুর্বৃত্তরা। আবারও তিনি ওঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। হামলার সময় সড়কে পথচারী এবং গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়। কিন্তু হামলাকারীদের ঠেকাতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। দেড় থেকে দুই মিনিট পর হামলাকারীরা সটকে পড়ে।

পুলিশের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার তারিক লতিফ বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার কয়েকটি ফুটেজ পেয়েছি। এতে দেখা গেছে, হামলায় ১০-১২ জন অংশ নিয়েছে। তাদের মধ্যে এক-দু’জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। হামলায় জড়িত বাকিদেরও শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

নিউমার্কেট থানা পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় ওয়াহিদুল হাসান বাদী হয়ে শনিবার রাতে মামলা করেছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যবসায়ী তৌফিক এহসান ও তার লোকজন নির্বাচন ছাড়াই গত ১৫ বছর ধরে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ব্যবসায়ী মালিক সমিতি দখল করে রেখেছিল। তৌফিক ছিলেন সভাপতি। তারা মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যবসায়ীরা কমিটির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তখন তৌফিকসহ তার লোকজন পালিয়ে যায়। এর পর ১৩ আগস্ট নতুন করে ১৩ সদস্যের আহবায়কব কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আহবায়ক করা হয় ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলামকে। ওয়াহিদুল জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক ও এহতেসামুল যুগ্ম আহবায়ক।

ব্যবসায়ী মালিক সমিতির আহবায়ক জহিরুল ইসলাম বলেন, ১৫ বছর ধরে যারা মার্কেট সমিতি দখল করে রেখেছিল, তারা সমিতির প্রায় ৫০ কোটি টাকা লুট করেছে। লুটের প্রমাণ মুছে ফেলতে তারা পালানোর সময় সমিতির সব কাগজপত্র নিয়ে গেছে। এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর মার্কেটের সামনে কেউ কেউ ফুটপাত দখলের চেষ্টা করে। এতে বর্তমান কমিটির নেতারা বাধা দেন। মার্কেটে খাবার পানি ও ইন্টারনেট সরবরাহ এবং পার্কিং দখল নিয়েও ওয়াহিদুল ও এহতেসামুলকে হুমকি দেয়া হয়েছিল। এসব কারণে তাদের ওপর হামলা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়