
ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোরপূর্বক গুম বা খুনের নির্দেশ দিতেন বলে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে (এইচআরডব্লিউ) জানানো হয়েছে। কর্মকর্তারা সংস্থাটিকে এ বিষয়ে অবগত করেছেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর তার সময়ে গোপন কারাগার আয়নাঘরে বন্দি থাকা অনেকে মুক্তি পেয়েছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য গঠন করা হয়েছে গুম কমিশন। গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করেছে তারা।
আরও পড়ুন<<>> শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গত ১৪ ডিসেম্বর ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে জমা দেয়া প্রতিবেদনে কমিশনের সদস্যরা এখন পর্যন্ত পাওয়া এক হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন। এতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গুম করার পদ্ধতির কিছু বর্ণনা আছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুম হওয়া বেশির ভাগ ব্যক্তিকে হয় হত্যা করা হয়েছে অথবা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, কমিশন গুমের পর ‘মেরে ফেলার পদ্ধতি সম্পর্কে যাচাইকৃত বিস্তারিত প্রতিবেদন’ পেয়েছে। একটি কার্যকর পদ্ধতি হলো- মাথায় গুলি করা। এরপর মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ দিয়ে বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, র্যাবে কর্মরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা এ পদ্ধতিকে মরদেহ ডুবিয়ে দেয়ার আদর্শ পদ্ধতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন<<>> জুলাই অভ্যুত্থানে নৃশংসতা: জাতিসংঘের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে
হত্যার উপযুক্ত স্থান হিসেবে বুড়িগঙ্গা নদী, শীতলক্ষ্যা নদী (কাঞ্চন সেতু) এবং পোস্তগোলা সেতুর কাছাকাছি এলাকার উল্লেখ আছে। সুন্দরবনের জলদস্যুদের কাছ থেকে জব্দ করা একটি নৌকার উল্লেখ আছে প্রতিবেদনে, যেটি পোস্তগোলা সেতুর কাছে রাখা হয়েছিল।
র্যাবের এক ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, র্যাবের তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান পরিচালিত একটি সেশনে ‘র্যাবে ঢোকার অংশ হিসেবে’ একটি সেতুতে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে।
র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগে নিযুক্ত আরেক সৈনিকের বরাতে এতে বলা হয়, এক ভুক্তভোগী নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে নদী থেকে উঠিয়ে আনা হয় এবং পরে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়।
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।