Apan Desh | আপন দেশ

এস কে সুরের ৬ কোটি টাকার সম্পদ ফ্রিজ

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৭:৩৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এস কে সুরের ৬ কোটি টাকার সম্পদ ফ্রিজ

সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন এ নির্দেশ দেন।

এ সম্পত্তির মধ্যে- দুটি ফ্ল্যাট, একটি জমি ও ৩৯টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪০ টাকা রয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে সূত্রে জানা গেছে। দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হুসাইন এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধের আবেদন করেন।

জব্দ হওয়া স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে—রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এস কে সুরের নামে থাকা একটি ফ্ল্যাট, যার দলিল মূল্য ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ৭০০ টাকা। ধানমন্ডিতে সুপর্ণা সুরের নামে থাকা ৪৪০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, যার দলিল মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর নামে নাটোরের লালপুরে থাকা ৮ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এসব স্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ১ কোটি ৭৭ লাখ ৮১ হাজার ৭০০ টাকা।

এ ছাড়াও সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও নন্দিতা সুর চৌধুরীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র, এফডিআর ও আমানত বাবদ ৩৯টি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪০ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস কে সুর অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর, রূপান্তরসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সম্পৃক্ত ধারার অপরাধের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে নিয়মিত মামলা দায়েরের আগেই তারা এসব সম্পত্তি স্থানান্তর করতে পারেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এসব সম্পত্তি স্থানান্তর করা হলে অনুসন্ধান কার্যক্রমের ফলাফল শূন্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ওই সম্পত্তি জব্দ ও অবরুদ্ধকরণ করা প্রয়োজন।

আলোচিত পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এস কে সুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের মার্চে এস কে সুরকে তলব করে দুদক। এরপর সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল না করায় তাঁর বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে। এস কে সুরের স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়।

গত ১৪ জানুয়ারি এস কে সুরকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে আটক করে দুদক। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৯ জানুয়ারি তার বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গত ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত এস কে সুরের লকার জব্দ করার অনুমতি দেন ঢাকার আদালত। পরে তার লকার খুলে এক কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। ২৭ জানুয়ারি এস কে সুরকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির একটি অর্থপাচার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান। অভিযোগ রয়েছে- এস কে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ও সুবিধা নিয়েছেন।

এ ছাড়া পিকে হালদার সংশ্লিষ্টরা আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন, অর্থের বিনিময়ে এস কে সুর পিকে হালদারকে সহযোগিতা করতেন।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়