
প্রতীকী ছবি
ঈদে ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কোরবানী দিয়ে চোখে দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মতিউর রহমানের ছেলে। মতিউর রহমানের মতো অনেকেই ঈদে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেন, কিন্তু আয়কর নথিতে তা দেখান না।
এনবিআর চায়, এসব ব্যয়ের হিসাব আয়কর বিবরণীতে করদাতারা সঠিকভাবে উল্লেখ করুন। এতে আয়কর ফাঁকি রোধ হবে এবং কর ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ হবে। এমনটি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এনবিআরের মতে, করদাতাদের উচিত, আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় সঠিকভাবে ঈদসহ যাবতীয় ব্যয়ের তথ্য দেয়া। কারণ, কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়লে করদাতাকে এর ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে। এর থেকে বাঁচতে ঈদ উৎসবে কেনাকাটা, উপহার কিংবা ভ্রমণের খরচ কত; তা আয়কর নথিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
যাদের বার্ষিক করযোগ্য আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণীতে ঈদের খরচও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আইটি-১০ বি ফরমে জীবনযাত্রার তথ্য দিতে হয়। এর ৭ নম্বর সারণিতে উৎসবজনিত ব্যয় দেখাতে হবে। বিশেষ করে, অভিজাত বিপণিবিতানে কেনাকাটা, ঈদ উপহার বা ভ্রমণের ব্যয় কর কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।
আয়কর নথিতে জীবনযাত্রার খরচ দেখানো বাধ্যতামূলক করার মূল উদ্দেশ্য হলো করদাতাদের প্রকৃত আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা। অনেক সময় দেখা যায়, কারও আয় কম থাকলেও তার জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি। এ ব্যবধান যাচাই করতে এনবিআর জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণী চায়।
বিশেষ করে, যারা ব্যয়বহুল পোশাক কেনেন, কোরবানীর জন্য পশু কেনেন, বিদেশ ভ্রমণ করেন কিংবা ঈদে লাখ টাকার কেনাকাটা করেন; তাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল আছে কি না, তা কর কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখেন।
ব্যয় বিবরণীতে যে সব তথ্য দিতে হয়
সংসার খরচ: পরিবারের মাসিক খরচ ও ভরণপোষণের তথ্য। আবাসন ব্যয়: নিজস্ব বা ভাড়া বাসার তথ্য, ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়। যানবাহন খরচ: গাড়ির চালক, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। পরিষেবা বিল: বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইন্টারনেট, টেলিফোন বিল। শিক্ষা ব্যয়: সন্তানদের পড়াশোনার খরচ। ভ্রমণ ব্যয়: দেশে বা বিদেশে ঈদ ভ্রমণের খরচ। উৎসবজনিত ব্যয়: ঈদের কেনাকাটা ও উপহার বাবদ ব্যয়।
সম্পদ বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক যাদের
যাদের বার্ষিক করযোগ্য আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি, তাদের জীবনযাত্রার খরচ দেখাতে হয়। তবে সম্পদ বিবরণী দাখিলের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত রয়েছে।
ক) যদি কেউ ব্যক্তিগত গাড়ির মালিক হন। খ) যদি কেউ অ্যাপার্টমেন্ট বা বাড়ির মালিক হন। গ) যদি কেউ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হন। ঘ) যদি কেউ সরকারি কর্মকর্তা হন এবং ঙ) যদি কারও মোট সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার বেশি হয়।
এসব শর্ত পূরণ করলে সম্পদের বিবরণী দাখিল করা বাধ্যতামূলক।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।