Apan Desh | আপন দেশ

গাজায় গণহত্যায় বিশ্বমোড়লদের নীরবতায় হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের নিন্দা

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ৮ এপ্রিল ২০২৫

গাজায় গণহত্যায় বিশ্বমোড়লদের নীরবতায় হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের নিন্দা

ফাইল ছবি

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নারকীয় গণহত্যা চলছে দিনের পর দিন। নারী-শিশুসহ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হত্যার বিপরীতে বিশ্বশক্তিগুলোর নীরব ভূমিকা বিস্মিত করছে সবাইকে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো একদিকে মানবতা নিয়ে কথা বলে। অন্যদিকে ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

এ অবস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। তারা এ হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলছেন, কোনো ধর্মই মানব হত্যাকে সমর্থন করে না। মানবতাই সকল কিছুর আগে। তাই গাজার ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলের নিষ্ক্রিয়তা শুধু লজ্জার নয়, তা মানবতাবিরোধী অবস্থানের সামিল।

তাদের মতে, কোনো ধর্মই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না। সে ইসলাম কিংবা অন্য কোনো ধর্ম। আগে মানবতা। তাই বিশ্বজুড়ে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে মানবতার জন্য সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান তারা।

বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েল আগ্রাসন চালিয়ে যে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তাদের এ মানবতা লঙ্ঘনের অপরাধের চরম শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। 

তারা বলেন, বিশ্বমোড়লরা এখানে নীরব ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু বিগত দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে প্রকৃত অপরাধী মারা গেলেও সেটাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তারা। অথচ সেসব দেশগুলো ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন জানাচ্ছে। যে কারণে তাদের প্রতিও ক্ষোভ ধিক্কার ও চরম নিন্দা।  

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা বলেন, বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে মানবতা লঙ্ঘন হলে সেটার প্রতিবাদ প্রতিদিন করা উচিত। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে আরও আগে থেকেই প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া উচিত ছিল। মানবতা লঙ্ঘনের অপরাধে বিশ্বমোড়লদের নিষ্ক্রিয় আচরণের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। যখন বাংলাদেশে কয়েকজন ডাকাতকে ক্রসফায়ার দিয়েছিল, সে সময় তারা মানবতা লঙ্ঘিত হওয়ায় র‌্যাবকে নিষিদ্ধ করেছে। বর্তমানে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি নারী-শিশুদের নিধন করছে, এটা তাদের চোখে পড়ে না। যে কারণে মানবতাবিরোধী অপরাধের সমর্থনকারীদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।  

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ বলেন, কোনো ধর্মের আগে মানবতা। কোনো ধর্মই মানবহত্যা সমর্থন করে না। গাজায় মানবতাবিরোধী হত্যার প্রতিবাদ পৃথিবীজুড়ে হওয়া উচিত। বিশ্বমোড়লদের নীরবতার জন্য ধিক্কার জানাই। অচিরেই এ মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ হোক। আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের এ অপরাধের বিচার হোক।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, আমরা মানবতাবাদী সংগঠন করি। সব সময় মানুষের জন্য কথা বলি। যেখানে মানবতা লঙ্ঘিত হবে, সেখানেই প্রতিবাদ হোক সর্বত্র। গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ চললেও আন্তর্জাতিক মহল সোচ্চার না হওয়া ও বিশ্বনেতাদের নীরবতার তীব্র নিন্দা জানাই।

সিলেটের গোপালটিলা মন্দিরের কাব্যতীর্থ পুরোহিত রজত কান্তি চক্রবর্তী বলেন, পৃথিবীর সব ধর্মেই মানব ও মানবতার কল্যাণের কথা বলা হয়েছে। গাজায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নারী-শিশুদের নিধন করা হচ্ছে। পুরো ফিলিস্তিনে ধ্বংসযজ্ঞ হচ্ছে। এর চেয়ে গর্হিত অপরাধ পৃথিবীতে আর কী হতে পারে। এমন হত্যাযজ্ঞ দেখেও বিশ্বমোড়লরা চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারছেন। তাদের নীরবতা পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষ হিসেবে তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। অচিরেই মানবতাবিরোধী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পুরো বিশ্বকে এক হয়ে আগ্রাসন বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়