
র্যাব মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান
বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ ঘিরে যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র্যাব ফোর্সেস সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটির মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে রমনা বটমূলে ছায়নটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখতে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, প্রতি বছরের মতো এবছরও পহেলা বৈশাখ ঘিরে যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ফোর্সেস প্রস্তুত রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতায়। সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। আশা করি উৎসবটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।
শহিদুর রহমান বলেন, বৈশাখী উৎসবকে ঘিরে অপপ্রচার রোধ করতে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। নববর্ষের উৎসবকে কেন্দ্র করে ইভটিজিং যাতে না হয়, সেজন্য সতর্ক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
র্যাব ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের মোটরসাইকেল টহল, গাড়ি টহল, চেকপোস্ট, অবজারভেশন টাওয়ার এবং গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে অনুষ্ঠানটি যেন সুন্দরভাবে করা যায়, সব রকম ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, অনুষ্ঠান আজকে থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ব্যান্ড শো আছে রোববার। সোমবার সকাল থেকে ঢাকা শহরে বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান হবে। মূল অনুষ্ঠান থাকবে রমনা বটমূলে। এরপর চারুকলার আনন্দ শোভাযাত্রা হবে। রবীন্দ্র সরোবর দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আছে। আমরা সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আশা করি এ অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, আমরা সাইবার ওয়ার্ল্ডেও মনিটরিং করছি, যেন কেউ অপপ্রচার চালাতে না পারে। এ অনুষ্ঠানে ব্যাপক জনসমাগম হয়। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার পাশাপাশি মা, বোন, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তার দিকে আমরা বিশেষ নজর রাখব। কোন ইভটিজিং যেন না হয়, সেদিকেও আমাদের সতর্ক সৃষ্টি থাকবে।
বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ পোড়ানোর ঘটনায় তিনি বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার তদন্ত হবে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যারা ছিলেন, তাদের কোনো ঘাটতি ছিল কিনা, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি সেরকম কিছু পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
র্যাব জানিয়েছে, সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ৩৪৬টি টহল দল এবং ৪১৩ জন সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যসহ মোট ২৪৪৯ জন র্যাব সদস্য মাঠে থাকবে।
এছাড়াও, রাজধানীর টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, হাতিরঝিল, মানিক মিয়া এভিনিউ, শিশু একাডেমি ও রমনা বটমূলসহ বর্ষবরণ কেন্দ্রিক এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে পর্যাপ্ত চেকপোস্ট, টহল ও অবজারভেশন পোস্ট।
বোমা হামলার আশঙ্কা এড়াতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং পরিচালনা করা হবে। এ ইউনিটগুলো সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকবে যেকোনও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলায়।
নাশকতা ও সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে বিশেষ কমান্ডো টিম, মোবাইল পেট্রোল, মোটরসাইকেল পেট্রোল ও সিসিটিভি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চলবে নজরদারি। এ ছাড়া অনলাইন জগতে গুজব, উস্কানি বা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা ঠেকাতে র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম সদা তৎপর রয়েছে।
নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অনুষ্ঠানস্থলগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ যৌন হয়রানি ও ইভটিজিং প্রতিরোধে নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। এ ধরনের কোনও ঘটনার শিকার হলে র্যাব সদস্যদের জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।