
ফাইল ছবি
বছর ঘুরে এলো পহেলা বৈশাখ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সূর্যদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বর্ষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। বাঙালির মেতে উঠবে প্রাণের টানে ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় নববর্ষের উৎসবে; গানে, কবিতায়, চিত্রকলায়, আচারে, প্রথায় দেশব্যাপী নতুন বছরকে বরণ করে নেবে। এদিন সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়োর (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে বের হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এবারের প্রতিপাদ্য ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
এরইমধ্যে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা শুরু হলেও সকাল ৮টা থেকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহিদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।
শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা শুধুমাত্র নীলক্ষেত ও পলাশী মোড় দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন। অন্যসব প্রবেশপথ ও সংলগ্ন সড়কসমূহ এ সময়ে বন্ধ থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, উৎসবমুখর পরিবেশে শোভাযাত্রা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। শোভাযাত্রায় সরাসরি আশপাশ থেকে প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং সুশৃঙ্খলভাবে শেষ প্রান্ত থেকে অংশ নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা অব্যাহত রেখে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য লোক-ঐতিহ্য ও ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে আরও বড় পরিসরে এবং বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে এবছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। শোভাযাত্রায় এবছর ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিবৃন্দ অংশ নেবেন। এ বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় এবছর থাকবে ৭টি বড় মোটিফ, ৭টি মাঝারি মোটিফ এবং ৭টি ছোট মোটিফ।
পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোন ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলাকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেইট, চারুকলা অনুষদ সম্মুখস্থ ছবির হাটের গেইট এবং বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেইট বন্ধ থাকবে।
ক্যাম্পাসে নববর্ষের সকল ধরনের অনুষ্ঠান সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। নববর্ষ উপলক্ষ্যে রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোন ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোন ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেইট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম এবং অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশে-পাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।
নববর্ষ উপলক্ষ্যে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।