
ফাইল ছবি
সরকারি কাজে বিদেশ সফরের সময় এখন থেকে স্বামী-স্ত্রী বা সন্তানদের সঙ্গে নেওয়া যাবে না—এমন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এ ছাড়া ঠিকাদারদের অর্থায়নে বিদেশ সফর ও কর্মকর্তাদের বিনোদনভ্রমণও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে গত ৯ এপ্রিল একটি পরিপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এটি সব দফতর, অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে নির্দেশনা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে। মূখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া স্বাক্ষরিত পরিপত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর সংক্রান্ত বেশ কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মূখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা তাঁদের স্ত্রী কিংবা স্বামী ও সন্তানদের সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না।
অপর নির্দেশনা বলা হয়েছে, ঠিকাদার ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে অবশ্যই বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
এছাড়াও জরুরি কারণ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব ও সচিবেরা তাঁদের একান্ত সচিব (পিএস) ও সহকারী একান্ত সচিবদের (এপিএস) সহযাত্রী হিসেবে বিদেশ ভ্রমণে নিতে পারেবন না।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জারি করা এ পরিপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব তানিয়া আফরোজের স্বাক্ষরে সরকারের সব দফতর, পরিদপ্ত ও অধিদফতরে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়। সব কর্মকর্তার অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরিপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত বছর ১১ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আরও একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল সাধারণভাবে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হবে। বছরের সম্ভাব্য বিদেশ ভ্রমণের একটা তালিকা জানিয়ে রাখতে হবে। বিদেশ ভ্রমণের জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ডেটাবেজ তৈরি করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার অফিস এর কাঠামো তৈরি করে দেবে ও এর তথ্য সংরক্ষণ করবে। সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা একাধারে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করবেন।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করবেন। তবে জাতীয় স্বার্থে এমন ভ্রমণ অপরিহার্য হলে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অধীন অধিদপ্তর বা সংস্থা প্রধানরা একান্ত অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থ ছাড়া একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণে যাবেন না।
বিদেশ ভ্রমণের বিষয়ে ওই পরিপত্রে আরও বলা হয়, বিদেশে অনুষ্ঠিতব্য সেমিনার বা ওয়ার্কশপ ইত্যাদিতে অংশ নিতে উপদেষ্টা ও সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণের প্রস্তাবের ক্ষেত্রে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অপরাপর অংশগ্রহণকারী দেশ থেকে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন আমন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ সেসব তথ্য উল্লেখ করবেন। বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাবনায় ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা ও প্রস্তাবিত কর্মকর্তার ওই কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতা ও উপযোগিতার বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে। কেনাকাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইনস্পেকশন কিংবা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্ট্যান্স টেস্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে শুধু সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পাঠানোর বিষয় বিবেচনা করতে হবে। সরকারি অর্থে কম প্রয়োজনীয় ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
তাতে আরও উল্লেখ করা হয়, সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে বিনোদন ভ্রমণ পরিহার করবেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা ছুটিতে যাওয়া পরিহার করবেন। বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাবনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত কর্মকর্তার আগের এক বছরের বিদেশ ভ্রমণ বৃত্তান্ত সংযুক্ত করতে হবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।