ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট কোন দিকে মোড় নেবে তার অনেকটাই দৃশ্যমান হবে চলতি মাসেই। যে কোনো রাজনৈতিক দলই বাস্তবতার আলোকে দ্রুত সিদ্ধান্ত পালটাতে পারে। সেক্ষেত্রে জুলাইকে আগামী নির্বাচনের জন্য টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ, পরিস্থিতি অনুসন্ধান করতে ৯ জুলাই ঢাকায় সরেজমিনে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অনুসন্ধানী মিশন। ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ইতালীয় নাগরিক রিকার্ডো চিলিলিয়ার।
রাজনীতির মঞ্চে বা ময়দানে অনেক কথা শুনা গেলেও বাস্তবতা দেখতে টানা দুই সপ্তাহ অবস্থান করবে প্রতিনিধি দলটি। এ সময়ে তারা জাতীয় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করবে। এই মিশনের সুপারিশের আলোকে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। এ মাসেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ থেকে আরও একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশে সফরে আসবেন। তারা অবাধ নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইইউ অনুসন্ধানী মিশন ঢাকায় অবস্থানকালে বেশ কয়েকটি দফতরের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সুপ্রিমকোর্ট, নির্বাচন কমিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দফতর, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠকের সময়সূচি নির্ধারণের কার্যক্রম চলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ওইসব দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, অনুসন্ধানী মিশন প্রধানত নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর যৌক্তিকতা, প্রয়োজনীয়তা এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করবে। সেজন্য গুরুত্ব দিতে পারে দুই বিষয়ে। প্রথমত নির্বাচনোত্তর দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও দ্বিতীয়ত নির্বাচনী কাঠামো। এসব বিষয় যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশের সরকারি কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনের আগে অনুসন্ধানী মিশনের এ সফরটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। স্বাভাবিকভাবেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ্রগহণ করে কি না-অনুসন্ধানী মিশনের মনোযোগ সেই দিকেই বেশি থাকবে। বিএনপি এখন পর্যন্ত দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেই তাদের অবস্থান জানিয়েছে।
অপরদিকে সরকার সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার; যে নামেই হোক সে প্রস্তাব মানতে নারাজ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি বলে মনে করে পর্যবেক্ষক মহল।
তবে ইইউ মনে করে, যে কোনো রাজনৈতিক দলই দ্রুত তাদের সিদ্ধান্ত পালটাতে পারে। সেক্ষেত্রে জুলাইকে আগামী নির্বাচনের জন্য টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে মনে করা হচ্ছে। এ কারণেই ইইউ জুলাইয়েই তাদের অনুসন্ধানী মিশন পাঠাচ্ছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।