সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বুয়েট শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা
ঢাকা: রাজধানী ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ে গিয়ে ‘নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে’ পুলিশের এমন অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আটক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, তারপরও আটক শিক্ষার্থীদের এর সঙ্গে জড়ানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের দাবি, এসব মেধাবী শিক্ষার্থীদের অযথা হয়রানি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বুয়েট শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন আটক বুয়েট শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। তাদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আলি আহসান জুনায়েদ নামে এক অভিভাবক।
এ সময় তারা অভিযোগ করেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। অথচ কোনো রাজনীতিতে যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও পুলিশের ভিত্তিহীন চক্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় বারবার সহযোগিতা চাইলেও উপাচার্য এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালকসহ বুয়েট প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না।
তারা আরও বলেন, ভিকটিম শিক্ষার্থীদের পরিবার হিসেবে আমরা মানসিকভাবে বেদনাদায়ক সময় পার করছি। তাদের ভবিষ্যৎ ও জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।
সংবাদ সম্মেলনে আটক শিক্ষার্থীদের দ্রুত জামিন ও মামলা থেকে মুক্তির জন্য বিচারবিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানান অভিভাবকরা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, আপনারা জেনেছেন যে, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে যাওয়া বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৪ পর্যটককে পুলিশ আটক করে মামলা দিয়েছে। হঠাৎ এমন অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ আমাদের মর্মাহত করেছে। অন্যায়ভাবে আটক করে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দেওয়ায় তাদের শিক্ষাজীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। ফলে নিরুপায় হয়ে আজকে অভিভাবক হিসেবে আপনাদের সহযোগিতা পেতে দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
>>> আরও পড়ুন: হাওরে বেড়ানো ২৪ বুয়েটছাত্রসহ ৩৪ শিক্ষার্থী ‘আটক থেকে গ্রেফতার’
অভিভাবকরা আরও বলেন, আমাদের জ্ঞাতসারে গত শনিবার (২৯ জুলাই) সন্তানরা ক্যাম্পাসের বন্ধুদের সঙ্গে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আরও বেশ কয়েকজন বুয়েটিয়ানকে পেয়ে তারা আনন্দিত হয় এবং সবাই একত্রে ঘোরার কথা জানায়।
‘এরপর ৩০ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে তাদের ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা মনে করেছি ট্যুরে আছে, হাওর এলাকায় হয়তো নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে কল যাচ্ছে না। দীর্ঘক্ষণ তাদের ফোনে না পেয়ে আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়ি। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর রাত ১০টার দিকে হঠাৎ ফোন করে আমাদের অনেকের কাছেই সন্তানরা তাদের নিজের ও অভিভাবকদের ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নম্বর জানাতে চায়। তারা জানায় যে, তাদের পুলিশ হাওরে নৌকায় ভ্রমণের সময় জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আটক করে তাহিরপুর থানায় নিয়ে এসেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এরপর আইডি কার্ডের নম্বর নেওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।
তারা বলেন, আইডি কার্ডের নম্বর জানার পর শিক্ষার্থীদের ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। ফলে আমরা এরপর থেকে তাদের বিষয়ে খোঁজখবর জানার জন্য ওসি ও এসপিকে বারবার ফোন করেছি।, কিন্তু ওনারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি। তাই, আমরা জানতেও পারছিলাম না কেন তাদের আটক করা হয়েছে। অনেক উদ্বিগ্নতার পরে সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা না কি নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার জন্য সেখানে গেছে। আমাদের সন্তানদের ব্যাপারে এমন অকল্পনীয় অভিযোগ শুনে আমরা আশ্চর্যান্বিত হই। আমরা মনে করি, এরকম হাস্যকর ও বানোয়াট অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।