Apan Desh | আপন দেশ

মানহানির ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের কারাদণ্ড নয়, ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৩৫, ৭ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ১৭:৫২, ৭ আগস্ট ২০২৩

মানহানির ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের কারাদণ্ড নয়, ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক -ফাইল ছবি

ঢাকা: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে নতুন যে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হবে সেখানে মানহানির মামলায় সাংবাদিকদের কারাদণ্ডের বিধান থাকবে না। 

নতুন আইনে এ জরিমানা ২০ লাখ টাকা বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বহু ধারা নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে যুক্ত করা হবে। কিছু ধারায় বড় সংশোধনী আনা হবে।  

সোমবার (৭ আগস্ট) মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত নীতিগত অনুমোদন হয়। এর ফলে কালাকানুন হিসেবে পরিচয় পাওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সরকার নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ করবে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল গণমাধ্যমকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মানহানির অভিযোগে কারাদণ্ডের বিধান ছিল। নতুন আইনে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার বিধান করা হবে। এটি একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় মানহানির বিচার করা হয়। এই ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারায় বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করেন, তার জন্য তিনি অনধিক তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কারাদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। নতুন আইনে এ জরিমানা ২০ লাখ টাকা বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে।

দেওয়ানি মামলায় যেভাবে জরিমানার বিষয়গুলো আছে, সেভাবেই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিষয়গুলো থাকবে বলেও জানান তিনি।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, যখন নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন হবে, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আর থাকবে না।

দেশে ব্যাপক বিরোধিতার মুখেই ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর করে সরকার। এরপর থেকে ভিন্নমত দমনে প্রায়ই এ আইন ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।

আইনটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োগ হয়েছে ভিন্নমতের রাজনীতিক, সাংবাদিক ও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে। সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রেও এ আইনের আনুপাতিক ব্যবহার বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে।

>>> আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত, হবে নতুন আইন

এমন প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন মহল থেকে আইনটি বাতিল অথবা সংশোধনের দাবি করা হয়। পাশাপাশি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিতের আহ্বান জানান।

সেই সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করে গত বছরের জুন মাসে একটি সুপারিশমালা বাংলাদেশ সরকারের কাছে পেশ করে।

‘ওএইচসিএইচআর টেকনিক্যাল নোট টু দ্য গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ অন রিভিউ অব দ্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’ শিরোনামের ওই সুপারিশমালায় আইনটির দুটি ধারা পুরোপুরি বাতিল ও ৮টি সংশোধন করতে বলা হয়।

এরপর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক চলতি বছর একাধিকবার বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না, সংশোধন হবে। তিনি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই আইনটি সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

তবে, মন্ত্রিসভার আজকের (৭ আগস্ট) বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ করার সিদ্ধান্ত হয়।

আপন দেশ/এমএমজেড

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়