আপন দেশ
শুধুমাত্র ইসকন এবং আরএসএস নামক হিন্দু জঙ্গিবাদী সংগঠনকে খুশি করতেই বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদেরকে ধর্ম পালনে কোণঠাসা করেছে। একে একে সকল আলেম ও মাওলানাদের জেলে ভরে নির্যাতন করেছে।
লম্বা পাঞ্জাবী কিংবা মুখে সুন্নতি দাঁড়ি এ অভিযোগেই জঙ্গি তকমা দিয়ে দিনের পর দিন জেলের কুঠরিতে ভরে নিপীড়ন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বিনা অপরাধে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে শুধু কারাগারেই রাখেননি, তাঁর চরিত্র নিয়েও কালিমা লেপন করা হয়েছে। শিশু বক্তা হিসেবে পরিচিত মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন করা হয়েছে। ‘কোরআনের পাখি’ আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে শুধুমাত্র হিন্দুত্ববাদীদের প্রেসক্রিপশনে হত্যা করা হয়েছে।
নিজের চোখেই আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এমন বহু আলেম ও মাওলানাদের চোখের পানি দেখেছি। কোথাও ওয়াজ কিংবা মাহফিল হলেই আওয়ামী লীগ সরকার জঙ্গি তকমা দিয়ে সে সকল মাহফিল বন্ধ করে দিতেন। এই ইতিহাস কিন্তু খুব পুরনো এবং অজানা নয়।
আরও পড়ুন<<>> ‘টুকরো টুকরো নানা ঘটনা গল্পের মতো করে বলবার চেষ্টা করেছি’
আসলে আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু কারো নিরাপত্তাই নিশ্চিত করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ শাসনামলে হিন্দু সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন। আওয়ামী লীগ তাদের একটা দাবীও মেনে নেয়নি। কিন্তু সেই হিন্দু সম্প্রদায় আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন। ইসকনের সঙ্গে মূল ধারার হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু আকিদাগত সমস্যা আছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু প্রাচীন মন্দিরগুলো দখলে নিয়ে ইসকন তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরটি অন্যতম উদাহরণ, যাহা কিনা এককালে কালী মন্দির হিসেবে পরিচিত ছিলো।
ভারত সরকারের প্রেসক্রিপশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল ঘরানার লোকজনকে একই ফ্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকনের প্রধান চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সভাপতি ও চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী, সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী ফাউণ্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নিহার হালদার, বাংলাদেশ হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে এবং বাংলাদেশ হিন্দু সেবক সংঘের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজীব ভদ্র।
পাঁচ আগস্টের পর থেকে তথাকথিত দাবী নিয়ে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এত দূর এসেছেন।
আরও পড়ুন<<>> ‘তু ক্যাম্চু’
সর্বশেষ রংপুরে আন্দোলনে দেখেছেন অধিকাংশই আওয়ামী লীগের মুসলমান যারা গেরুয়া পোশাকে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনে ঢুকে পড়েছেন। আওয়ামী লীগ শাসনমালে হিন্দু নিপীড়ন নিয়ে খোদ ভারত সরকার একটা কথাও বলতেন না। বর্তমানে যেই কিনা ইসকনের বহিষ্কৃত প্রধান গ্রেফতার হলেন ভারত সরকার নড়েচড়ে বসলেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি হুংকার দিচ্ছেন বাংলাদেশ দখলে নেবেন।
এগুলো নিয়ে বহু আগেই ভাবা উচিত ছিলো। কারণ ভারত এবং বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এখনও আওয়ামী লীগের প্রেম ভুলতে পারেনি। পাঁচ আগস্টের পর যারা কিনা আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলতেন, তারাই এখন সংখ্যালঘু তকমা ব্যবহার করছেন। একটা কথা মনে রাখবেন, এই দেশে ফের যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হয় তাহলে ইসলাম বলে কিছুই থাকবে না। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উপর নিপীড়নের মাত্রা আরো বাড়বে। এই দেশকে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ব্যবহার করবে আওয়ামী লীগ।
অতএব হিন্দু সম্প্রদায়ের এ তথাকথিত আন্দোলন শুধু বন্ধ করলেই হবে না, একইসঙ্গে ইসকনকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।
লেখক: নয়ন সাহা
আইনের শিক্ষার্থী, মহানগর ল’ কলেজ, ঢাকা।
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।